insta logo
Loading ...
×

ডানার ঝাপটা, চাষিদের সুখবর, কোন ব্লকে কত বৃষ্টি

ডানার ঝাপটা, চাষিদের সুখবর, কোন ব্লকে কত বৃষ্টি

দেবীলাল মাহাত, বিশ্বজিৎ সিং সর্দার ও তাপস কুইরি :

আশঙ্কাই সত্যি হলো! শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বোঝা যায়নি ডানার পরোক্ষ প্রভাবে আমন ধান ও সবজিতে ক্ষতির মুখে পড়বেন পুরুলিয়ার কৃষকরা। কিন্তু শুক্রের পর শনিবারও বৃষ্টি না থামায় চাষের জমিতে হেলে পড়েছে আমন ধান। অনেক ধান পড়েও গিয়েছে। ক্ষতি হয়েছে সবজিরও। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। কোটশিলা, জয়পুর, আড়শা , বাঘমুন্ডি, বলরামপুরের চাষীদের অবলম্বন শুধুই হা-হুতাশ। তারা সরকারের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছেন। বলরামপুরের কৃষক সঞ্জিত মাঝি, নরেন মাঝি, ঝালদার চাষি মন্টু কর্মকার, বরাবাজারের মঙ্গল মাহাতো, সন্তোষ মাহাতো প্রমুখ বলেছেন, একেবারে ধান তোলার মুখে যে ক্ষতি তাতে সরকার সাহায্য না করলে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

সাইক্লোন ডানার প্রভাব তোড়াং গ্ৰামে হুড়মুড়িয়ে বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়ল। গ্ৰামের বাসিন্দা বৃদ্ধা সুভদ্রা মাহাতো জানান শুক্রবার সকালে তাঁর বাড়ির একটি দেওয়াল সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে। সামনের দিক থেকে পুরো ফাঁকা ইট গুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। বৃদ্ধা বলেন ঘটনার সময় তিনি বাড়িতেই ছিলেন। তাঁর শারীরিক কিছু আঘাত না লাগলেও রান্নার বিভিন্ন সামগ্ৰীর ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে গ্ৰামের বাসিন্দা গোপেশ্বর মাহাতো বলেন এই ঘটনার পর বৃদ্ধা অসহায় হয়ে চরম সংকটে রয়েছেন। তাই আর্থিক সাহায্য ও বাড়িটির মেরামতের বিষয়ে প্রশাসনকে এগিয়ে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন।

অন্যদিকে সুপার সাইক্লোন ‘ডানা’ আছড়ে পড়ার আগেই চাষীদের সতর্ক করেছিলো কৃষি দপ্তর। বিভিন্ন ভাবে মাইকিং-র মাধ্যমেও চাষীদের সতর্ক করা হয়। দেওয়া হয় নানান পরামর্শ। এই ঝড় বৃষ্টির হাত থেকে ফসলকে বাঁচাতে কী করনীয়, আর কী করনীয় নয় তা প্রচার করা হয়। এক ফসলী পুরুলিয়া জেলার কৃষকরা মূলত চাষবাসের ওপরই নির্ভরশীল।
তারা জানান, হঠাৎ করে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে জমিতে অনেক ধান পড়ে গেছে।পড়ে যাওয়া ধানে অঙ্কুরোদগম হয়ে যাবে। সেই ধান সহায়কমূল্যে বিক্রি করতে অসুবিধা হবে।
আড়শা ব্লকের তুম্বাঝালদা গ্রামের চাষি চিত্তরঞ্জন মাহাত জানান, এই বছর দেরীতে ধান লাগালেও ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ে তিন বিঘা জমির ধান পড়ে গেছে। সেগুলি জমিতেই পড়ে আছে। কী হবে,তা নিয়ে চিন্তায় আছি।খামার খোলা বৃষ্টিতে ভিজে গেছে। শীতের প্রাক্কালে এই ঝড়-বৃষ্টি তাদের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এই ক্ষয়ক্ষতি কিভাবে পূরণ হবে সেই দুশ্চিন্তায় এখন দিন কাটছে তাদের। বৃষ্টি থামার পরেও কতটা ধান ঘরে তোলা যাবে তাই নিয়ে চিন্তায় জেলার চাষিরা।
ইতিমধ্যে চাষিদের কাছে সুখবর একটাই। শস্য বিমায় নাম তোলার সময় বৃদ্ধি করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আগে এই বিমা পেতে নাম তোলার শেষ সময়সীমা ছিল ৩১ অক্টোবর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন শেষ তারিখ একমাস বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর করা হচ্ছে।

তবে আশার কথা শুনিয়েছেন পুরুলিয়ার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন ) আদিত্য দুয়ারি। তিনি বলেন, ” বিক্ষিপ্ত জায়গায় কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমন ধান চাষের জমিতে নুইয়ে পড়লেও রোদ দিলেই তা খাড়া হয়ে যাবে। ফলে কৃষকদের চিন্তার কোন কারণ নেই। তেমন কোন ক্ষতি হবে না। জেলায় বিলম্বিত চাষ হয়েছে। তাই পুষ্ট হয়নি ধান। তবুও আমরা কোথাও কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা তা জানতে ব্লক থেকে রিপোর্ট চেয়েছি। “

Post Comment