insta logo
Loading ...
×

মধ্যরাতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে পুড়ে ছাই ১২টি দোকান

মধ্যরাতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে পুড়ে ছাই ১২টি দোকান

নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া:

মধ্যরাতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুরুলিয়া শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা—পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ড কার্যত আতঙ্কের সাক্ষী রইল।পুড়ে ছাই বাসস্ট্যান্ডের পিছন দিকের ১২টি দোকান। রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আচমকাই আগুন লাগে বরাবাজারগামী বাস ছাড়ার রুট সংলগ্ন এলাকায়।মুহূর্তের মধ্যেই একের পর এক দোকানে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। সঙ্গে পুড়ে যায় একাধিক ফলের ঠেলাগাড়িও।

দমকলের তিনটি ইঞ্জিন প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও, এই অগ্নিকাণ্ডের পর সামনে এসেছে আরও বড় প্রশ্ন— এই দোকানগুলি আদৌ বৈধ ছিল কি না?

অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডের ঠিক পিছন দিকে বিধি বহির্ভুতভাবে ঝুপড়ি, টিন ও কংক্রিটের দোকান গড়ে উঠেছিল। অথচ বাসস্ট্যান্ডের ভেতরেই পুরসভার তৈরি মার্কেট কমপ্লেক্স থাকলেও এখনও সেই দোকানগুলি বণ্টন করা হয়নি। ফলে পুরসভার স্পষ্ট ঘোষণা থাকা সত্ত্বেও, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যত্রতত্র দোকান বসছিল বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে— পুরসভার নজর এড়িয়ে কীভাবে বছরের পর বছর ধরে এই দোকানগুলি চলতে পারে? কার মদতে এই অবৈধ দখল?
গভীর রাতে হঠাৎ দোকানগুলিতে আগুন ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক ছড়ায় গোটা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। পাশেই দমকল কেন্দ্র থাকায় একটি ইঞ্জিন দ্রুত পৌঁছালেও আগুনের তীব্রতায় প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয়।
পরে দমকলের আরও দুটি ইঞ্জিন ও পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দমকল সূত্রে প্রাথমিক অনুমান, একটি প্যাকেট হাউসের দোকান থেকেই আগুনের সূত্রপাত।

ঘটনার পর পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি জানান,“আমি নিজে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। কোথা থেকে কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা তদন্ত করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও একটি মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হবে।”
এদিকে সোমবার পুরসভায় বাসস্ট্যান্ডের মার্কেট কমপ্লেক্সের দোকান বণ্টন নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ড পুর শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। মালিকানা প্রশাসনের হলেও দেখভালের দায়িত্ব পুরসভার। সেই দায়িত্বে গাফিলতি ছিল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও বাসস্ট্যান্ড স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, “আগুনের ভয়াবহতা ছিল মারাত্মক। দমকলের দ্রুত তৎপরতায় বড়সড় বিপদ এড়ানো গেছে। প্রায় ১২টি দোকান সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে।”

ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে দমকল বিভাগ ও পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। তবে আগুন নেভার পরও বাসস্ট্যান্ডের অবৈধ দখল ও প্রশাসনিক ভূমিকা নিয়ে আগুনের উত্তাপ এখনও থামেনি।

Post Comment