নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া:
পরিকাঠামোতে ঘাটতি, নিরাপত্তার সমস্যা এবং দু’টি আলাদা ক্যাম্পাসে চিকিৎসা ও শিক্ষার জটিলতার প্রতিবাদে চরম আন্দোলনে নামলেন পুরুলিয়া গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ৯৪ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক। দীর্ঘদিনের ক্ষোভেই শুক্রবার থেকে তারা অবস্থান-বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন।
ইন্টার্নরা জানিয়েছেন, পুরুলিয়া শহর ক্যাম্পাস ও হাতোয়াড়া ক্যাম্পাস—দুই জায়গায় প্রতিদিন যাতায়াত করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি চিকিৎসা বিভাগ দুটি ক্যাম্পাসে বিভক্ত থাকায় পড়াশোনা ও পরিষেবা—দু’দিকেই বাড়তি চাপ তৈরি হচ্ছে। তাদের দাবি, সমস্ত চিকিৎসা বিভাগকে একত্রে হাতোয়াড়া ক্যাম্পাসে স্থানান্তর এবং হাসপাতালের সার্বিক পরিকাঠামোর উন্নয়ন অবিলম্বে করতে হবে। রোগীদের অসুবিধার কথা ভেবে আপাতত বাইরে বসেই চিকিৎসা দিচ্ছেন ইন্টার্নরা। তবে দ্রুত সুরাহা না হলে বহির্বিভাগ পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া তাদের আর উপায় থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
রোগীরাও চিকিৎসকদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। রোগী খেদন প্রামাণিক বলেন, “ডাক্তাররা বাইরে বসে আমাদের চিকিৎসা করছেন। এতে অসুবিধা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ওরা আমাদের জন্যই এই কষ্ট করছেন। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”
ইন্টার্নদের দাবিকে যথার্থ বলেই স্বীকার করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি সুকমল বিষয়ী জানান, “পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও বিভাগ একত্রিত করার বিষয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এদিকে আন্দোলনের বিরোধিতা করে সরব হয়েছে পুরুলিয়া সদর হাসপাতাল বাঁচাও মঞ্চ। সংগঠনের সভাপতি অসীম সিনহা সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, “সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রেখে কোনও আন্দোলনই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার সদর ক্যাম্পাসকে জেলা হাসপাতাল হিসেবে পুনরায় অনুমোদন না দেওয়া পর্যন্ত দুই ক্যাম্পাসেই পরিষেবা চালু রাখতে হবে। না হলে আমরাও বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।”
পরিস্থিতি ঘিরে সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়েই এখন প্রশ্ন তুলছেন পুরুলিয়ার সাধারণ মানুষ। রোগীদের আশঙ্কা—দাবি আদায়ে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে জেলার স্বাস্থ্য পরিষেবাই ব্যাহত হতে পারে।











Post Comment