insta logo
Loading ...
×

কাঁটাডির নাড়ুর চমকে দেওয়া কাহিনি, জানলে অবাক হবেন…

কাঁটাডির নাড়ুর চমকে দেওয়া কাহিনি, জানলে অবাক হবেন…

দেবীলাল মাহাত, আড়শা:

“হ্যালো গাইজ, আমি নাড়ু বলছি কাঁটাডি লে”। স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল এখন এই সংলাপ। বাচ্চা থেকে বড় সবাই এখন নাড়ু জ্বরে মজে। ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম সবেতেই এখন নাড়ুর সংলাপের ছড়াছড়ি। সকলের মুখে এখন নাড়ুদা ।

জঙ্গলমহল আড়শা ব্লকের কাঁটাডি মোড়ের বাসিন্দা নাড়ুগোপাল মোদক। আদি বাড়ি এই ব্লকের পুয়াড়া গ্রামে । পুরুলিয়া – জামশেদপুর ১৮ নং জাতীয় সড়কের ধারে তাদের পরিবারের মিষ্টির দোকান, হোটেল থেকে ভাড়া গাড়ির ব্যবসা। সেই দোকানে চপ থেকে সিঙ্গাড়া, জিলিপি থেকে মিষ্টি সব মেলে । দোকান থেকে লভ্যাংশ টাকা দিয়ে দিব্যি চলে নাড়ুর ভরা সংসার। পরিবার যৌথ। তিন ছেলে আর বৌ ছাড়াও পরিবারে অন্যরা আছেন। দোকানে থাকাকালীন অবসর সময়ে মাঝে মাঝেই ‘রিল ‘বানাতেন। অনেকেই মজার ছলে হাসিঠাট্টা করলেও সেই ‘রিল ‘বানানো থেকে তিনি সরে আসেননি। কয়েক মাস আগে একদিন ঘটনাচক্রে ফেসবুকে আপলোড করা কয়েক সেকেন্ডের একটি সংলাপের ভিডিও “হ্যালো গাইজ,আমি নাড়ু বলছি কাঁটাডি লে ” কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। বর্তমানে ইনস্টাগ্রামে সেই ভিডিও ২ মিলিয়ন ও ফেসবুকে ১ মিলিয়ন ভিউ হয়েছে। তারপর থেকেই সবাই মজে নাড়ুর এই সংলাপে। স্যোশাল মিডিয়ার দৌলতে সেই সংলাপ ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঝাড়খন্ড, ওড়িশা সহ বিভিন্ন রাজ্যে । সংলাপের সৌজন্যে দিন দিন বেড়েছে দোকানের ভীড়। বিক্রিও বেড়েছে কয়েক গুণ। দোকানের সামনে প্রতিদিন সারিসারি গাড়ির লাইন। তাঁকে দেখলেই ছেঁকে ধরছেন লোকজন । আবদার করছেন সেই ভাইরাল সংলাপ শোনার জন্য। আর তাতেই ব্যস্ততা বেড়েছে নাড়ুর । কেউ সেলফি তুলতে ব্যস্ত তো, কেউ ভিডিও রিল’ বানাতে। কেউ বা দোকানে নাস্তা খেতে খেতে আলাপচারিতায়। সাথেসাথে বাড়িতে ভ্লগারদের ভিড় । বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে ডাক পড়ছে তার। দিনদিন লাফিয়ে বাড়ছে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যাও ।

একাধিকবার চেষ্টার পর, বিকল্প মোবাইল নং থেকে তার সাথে যোগাযোগ করা গেল। গলায় ভরপুর আন্তরিকতা। তারপর বললেন, ” কিছু মনে করবেন না। আসলে সারাদিন ধরে মোবাইল বেজেই চলছে । তাই সবার ফোন ধরতে পারছি না।” বিখ্যাত হলেও, দোকান থেকে গাড়ি ব্যবসা কোনো কিছুই ছাড়েননি নাড়ু। নাড়ু বলেন, ” এই সংলাপের জন্য স্যোশাল মিডিয়ায় এত ভালোবাসা পাবো, ভাবিনি। মানুষের ভালোবাসা পেয়ে খুব ভাল লাগছে।” তার আরও বার্তা, “কাজ করে গেলে, সাফল্য একদিন আসবেই।”

এই সংলাপ এলো কীভাবে? তার উত্তরে নাড়ু বলেন, ” বাড়িতেই রয়েছে ভাড়া গাড়ির ব্যবসা। সেই সূত্রে ড্রাইভার সহ বন্ধুদের ‘হ্যালো গাইজ ‘, ‘হ্যালো গাইজ’ বলে সম্বোধন করে ডাকতাম। তারপর থেকেই এই সংলাপ মুখে চলে আসে। সেই সংলাপেই যে বিখ্যাত হয়ে যাবো ,তা কখনোও ভাবিনি।”

ভাইরাল হওয়ার পর নাড়ুকে নিয়ে গান গেয়েছেন পুরুলিয়ার গায়ক – শিকারি কুমার। রচনা ও সুর তাঁরই দেওয়া। সেই গানও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। কালীপূজায় আড়শা সর্বজনীন কালীপুজা কমিটির উদ্যোগে নাড়ুকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। কমিটির সভাপতি তথা শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি উজ্জ্বল কুমার বলেন, “নাড়ুদা বর্তমান সময়ে ভাইরাল। তাকে সংবর্ধনা দিতে পেরে ভালো লাগছে।”
কাঁটাডির বাসিন্দা ভগতু সহিস বলেন, “নাড়ুদার নাম এখন সকলের মুখেমুখে।
তার জন্য কাঁটাডির নামও উজ্জ্বল হয়েছে।”

Post Comment