সুইটি চন্দ্র, পুরুলিয়া:
আলোর উৎসবের আমেজে ইতিমধ্যেই উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে জঙ্গলমহল। দীপাবলিকে কেন্দ্র করে পুরুলিয়ার বাজারে শুরু হয়েছে কেনাকাটার রমরমা। তবে এবারের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ — রাজস্থানি ছোঁয়ায় তৈরি লাড্ডু প্রদীপ ও হাতি প্রদীপ। ঝাড়খণ্ড সীমান্ত সংলগ্ন এই জেলার বাজারে বুধবার থেকেই দেখা মিলেছে এই অভিনব প্রদীপগুলির, আর এসেই সেগুলি হয়ে উঠেছে ট্রেন্ডিং।

যোধপুরের বিখ্যাত হলুদ লাড্ডুর মতো দেখতে প্রদীপ, সঙ্গে জিলিপি ও কাজু বরফির আদলে আরও প্রদীপ। এগুলি আসলে প্রদীপ হলেও দেখতে একেবারে মিষ্টির মতো। অন্যদিকে, হাতির পিঠে বসানো প্রদীপের সলতে যেন রাজস্থানের হস্তশিল্পের ছাপ বহন করছে।“মানুষ এখন নতুন কিছু খুঁজছে। লাড্ডু ও হাতি প্রদীপ এখন সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে,” — জানালেন নরেশ ফোগলা, এক স্টেশনারি বিপণীর কর্ণধার।
তবে এই প্রিমিয়াম প্রদীপের রমরমায় কি হারিয়ে যাচ্ছে মাটির প্রদীপ? পোস্ট অফিস মোড়ের ফুটপাতজুড়ে এখনও জ্বলছে ঐতিহ্যের আলো। আটটি মাটির প্রদীপ মিলছে ১০ টাকায়, আর ছোটগুলো এক টাকা পিস। জেলার বিখ্যাত পুতুল প্রদীপ এখনও নিজের জায়গা ধরে রেখেছে ক্রেতাদের মনে।
একইসঙ্গে পিতল-কাঁসার দোকানেও জমজমাট কেনাবেচা। লক্ষ্মী-গণেশের যুগল মূর্তি কিনতে ভিড় উপচে পড়ছে। দাম শুরু ৬০০ টাকা থেকে, আবার ১০ হাজার টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে প্রিমিয়াম মূর্তি।
“লক্ষ্মী-গণেশের মূর্তি ছাড়া দীপাবলি ভাবাই যায় না। এ বছর দাম একটু বেড়েছে, কিন্তু বিক্রি দারুণ,” — বললেন কার্তিক চন্দ্র হালদার, বাসন দোকানের মালিক।

অন্যদিকে, কালীপুজো ঘনিয়ে আসায় শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা। তবে সমস্যায় ফেলেছে বাজারে জবা ফুলের আকাল। ফলে আশ্রয় নেওয়া হচ্ছে প্লাস্টিকের জবা ফুলের।
তাই সবাই প্লাস্টিকের জবা নিচ্ছে। “দেখতে সুন্দর, আবার টেকসইও, দামো আয়ত্বের মধ্যে”— জানালেন বর্ষা দত্ত, দশকর্মা ভাণ্ডারের মালিক।
ঝালর, বন্দরবার, রঙোলির উপকরণ, আলপনা, মটকা ক্যান্ডেল—সব মিলিয়ে আলোর উৎসবকে ঘিরে পুরুলিয়ার প্রতিটি বাজারে চলছে উৎসবের সাজের প্রতিযোগিতা। ঐতিহ্য আর আধুনিকতার আলোয় ঝলমল করছে জঙ্গলমহল।











Post Comment