নিজস্ব প্রতিনিধি,ঝালদা:
পঝালদার মহকুদর ও গোপালপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে চললো করম পূজা ও করম নাচের অনুষ্ঠান। কুমারী মেয়েরা ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি মেনে অঙ্কুরিত বীজের ডালা নিয়ে পূজায় অংশ নিচ্ছেন। তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচগানে যোগ দিচ্ছেন গ্রামবাসীরাও। উৎসবের এই মিলনমেলায় একসঙ্গে মেতে উঠছেন আদিবাসী ও অনাদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ।
ব্রতী আরতি মাহাতো বলেন, “করম আমাদের জীবনের অংশ। প্রতি বছর আমরা এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করি। প্রকৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই এই আয়োজন।”
সংস্কৃতিবিদদের মতে, করম উৎসব শুধু একটি কৃষি-আচার নয়; এটি জীবন, সংগ্রাম, আনন্দ-বেদনা এবং ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি। করম গানে কুমারী মেয়েরা ব্যক্ত করেন তাদের আশা, স্বপ্ন ও অনুভূতি, আর করম নাচে ফুটে ওঠে প্রাচীন সভ্যতার চেতনা, যা আজও গ্রামীণ সমাজে ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেয়।
কোমল যুবশক্তি, প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা আর ঐতিহ্যের বন্ধনে আবদ্ধ এক অনন্য উৎসব—করম। প্রতিবছর জাওয়া বা অঙ্কুরোদ্গমকে কেন্দ্র করে পালিত এই কৃষিনির্ভর উৎসব। এবারও সেই আবহে মাতোয়ারা পুরো পুরুলিয়া জেলা। ছোটনাগপুর অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে উদ্যাপিত এই উৎসব ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, ছত্রিশগড় থেকে শুরু করে সুদূর আসাম পর্যন্ত। পাঁচ দিন ধরে নানা আচার-অনুষ্ঠান শেষে ধমসা-মাদলের তালে নাচগান ও আনন্দ-উৎসবে সমাপ্ত হয় এই মহোৎসব।
স্থানীয় বাসিন্দা যুধিষ্ঠির মাহাতো বলেন, “এই উৎসব আমাদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার পাশাপাশি সামাজিক বন্ধনকেও আরও দৃঢ় করে।”
Post Comment