নিজস্ব প্রতিনিধি, আড়শা :
আড়শার যুবক বিষ্ণু কুমারের রহস্যমৃত্যুতে তদন্ত শুরু করল সিআইডি। বুধবার হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীরা পুরুলিয়ার আড়শায় পৌঁছে মৃতের বাড়ি ও থানায় যান। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন, কয়েকজন পুলিশকর্মীরও বয়ান রেকর্ড করেন।
গত ১৯ জুলাই রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন আড়শার বাসিন্দা বিষ্ণু কুমার। তাঁকে সিরকাবাদ গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরের দিন আড়শা থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়। প্রথম ময়নাতদন্তে পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো মেডিকেল কলেজ জানায়— বহিরাগত আঘাত নেই, মৃত্যু হয়েছে শারীরিক জটিলতায়।
কিন্তু পরিবারের দাবি ভিন্ন। তাঁদের অভিযোগ, ১৬ জুলাই মোবাইল চুরির অভিযোগে থানায় ডেকে বিষ্ণুকে মারধর করে পুলিশ। সেই আঘাতের ফলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়। বিজেপি নেতৃত্ব বিষ্ণুর বাড়িতে যান, বিরোধী দল সরব হয়। এরপর ভাই সমন কুমারের অভিযোগের ভিত্তিতে অজ্ঞাত সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে আড়শা থানার পুলিশ। পাশাপাশি সমন হাইকোর্টে মামলা করেন।
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত হয় নদিয়ার কল্যাণীর এইমসে। সেখানে মৃতদেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ধরা পড়ে। তবে চিকিৎসকদের মতে, সেসব আঘাত মৃত্যুর অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে লেগেছিল। দুটি রিপোর্টের মধ্যে বিস্তর তফাৎ দেখে ১৯ অগস্ট হাইকোর্ট তদন্তভার তুলে দেয় সিআইডির হাতে। আদালত নির্দেশ দেয়, পৃথক কেস ডায়রি করে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
আদালতের নির্দেশ মতো তিন দিনের মধ্যেই জেলা পুলিশ মামলার সমস্ত নথি সিআইডির হাতে তুলে দেয়। ভবানী ভবন থেকে তদন্তভার দেওয়া হয় হোমিসাইড শাখার এক সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিককে।
সিআইডি সূত্রে খবর, বুধবার তদন্তকারী আধিকারিক প্রথমে যান বিষ্ণুর বাড়িতে। ভাই সমন কুমার, স্ত্রী নমিতা কুমার এবং মা গৌরীবালা কুমারের আলাদা করে বয়ান রেকর্ড করা হয় ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে। এরপর তিনি যান আড়শা থানায়। সেখানকার প্রথম তদন্তকারী আধিকারিক ছাড়াও কয়েকজন পুলিশকর্মীর কাছ থেকে বয়ান নেন।
বৃহস্পতিবারও তদন্তকারী আধিকারিক ফের যান থানায় এবং গ্রামে। কথা বলেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে। বিষ্ণুর ভাই সমন বলেন, ‘‘সিআইডি আধিকারিক আমাদের যা জিজ্ঞেস করেছেন, আমরা সবকিছুই বিস্তারিত জানিয়েছি।’’










Post Comment