নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া :
বর্ষার একের পর এক নিম্নচাপের দাপটে টানা বৃষ্টিতে ভিজছে পুরুলিয়া। শুক্রবারও ব্যতিক্রম হয়নি। জেলায় গড়ে ২১.৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য বলছে, সর্বাধিক বৃষ্টি নথিভুক্ত হয়েছে মানবাজারে— ৫০ মিলিমিটার। তার পরেই কাশীপুরে ৩৪.৮ মিলিমিটার, বাঘমুণ্ডিতে ২৮ মিলিমিটার। বরাবাজার, নিতুড়িয়া ও পাড়ায় যথাক্রমে ২১, ২১.২ ও ২৫.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। জয়পুর ও ঝালদায় যথাক্রমে ১৩.৬ ও ১৩.৮, বলরামপুরে ১৩.২ মিলিমিটার, সাঁতুড়ি ও পুঞ্চায় যথাক্রমে ১৮ ও ১৭.৮ মিমি অন্যদিকে হাতোয়াড়ায় ১০.৬ মিলিমিটার ও হুড়ায় ১১.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন পুরুলিয়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ২৩ ডিগ্রি।

এত বৃষ্টির জেরে ফের বিপদের মুখে জেলার গ্রামাঞ্চল। আবহাওয়া দপ্তর আজও জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। জারি রয়েছে কমলা সতর্কতা। পাহাড়ি ঢল নেমে নদী-নালা উপচে পড়ছে। বান্দোয়ানের আমলি জোড়া (নদী)র জল বিপদসীমা ছাপিয়ে কজওয়ের উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে। আর সেখানেই ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা।
শনিবার সকালে প্রায় ৩০ জন যাত্রী বোঝাই একটি পিকআপ ভ্যান কুঁচিয়া কামিলা পাড়া থেকে রওনা হয়েছিল। স্থানীয় কুয়েরডি, আস্তাগোড়া প্রভৃতি গ্রামের যাত্রীরা বেশিরভাগই জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ, যাচ্ছিলেন বান্দোয়ান হয়ে ঝাড়খণ্ডের গালুডির দিকে, এক কবিরাজের কাছে। ভালোপাহাড়ের কাছে আমলি জোড়ের কজওয়ে পার হওয়ার সময় আচমকাই জলের স্রোতে ভেসে যায় ভ্যানটি। মুহূর্তে চিৎকার-আর্তনাদে ভরে ওঠে এলাকা।

তবে ভাগ্যক্রমে নদীর ওই জায়গাটির গভীরতা বেশি ছিল না। প্রাণপণ সাঁতার কেটে কোনওক্রমে আত্মরক্ষা করেন যাত্রীরা। ভ্যানে থাকা প্রায় সবাই ভিজে গেলেও অক্ষত অবস্থায় তীরে উঠতে সক্ষম হন। কেউ গুরুতর জখম হননি।
স্থানীয়দের ক্ষোভ, প্রতিদিন এই কজওয়ের উপর দিয়ে জলের স্রোত বইছে। প্রশাসন থেকে বারবার সতর্কবার্তা দেওয়া হলেও অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালিয়ে পার হচ্ছেন। তাদের মতে, ‘‘ভাগ্য ভাল বলে প্রাণে বেঁচে গেলেন সকলে। না হলে আজ বড়সড় বিপর্যয় ঘটত।’’ এদিকে টানা বৃষ্টিতে বান্দোয়ানের টটকো জলাধারে জল বেড়ে যাওয়ায় এদিন সব গেট খুলে দেওয়া হয়। ফলে জলস্ফীতি দেখতে বহু মানুষজন ভিড় জমান।
সাগাসুপরডির কজওয়ের উপর দিয়ে জল যাওয়ায় ওই এলাকায় যোগাযোগ বন্ধ। ঘরবন্দি হয়ে পড়েন মানুষজন।
Post Comment