নিজস্ব প্রতিনিধি , পুরুলিয়া :
নতুন ট্রেন, স্টপেজ বাড়ানো, রুট সম্প্রসারণ—সব মিলিয়ে ছ’দফা দাবি নিয়ে রেল ভবনে হাজির হলেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। বুধবার দিল্লিতে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকে জেলার রেল পরিষেবা সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করেন তিনি। মিলল সৌজন্য, মিলল আশ্বাসও। যদিও বাস্তবায়ন কবে হবে সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা।
পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের যাত্রী পরিষেবায় দীর্ঘদিন ধরেই একাধিক ঘাটতি রয়েছে। সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই রেলমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মূলত ছয়টি বিষয়ের উপর জোর দেন সাংসদ। প্রথমত, পুরুলিয়া থেকে নতুন ট্রেন চালু করার দাবি তোলেন তিনি, যাতে জেলার সঙ্গে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরের সংযোগ আরও মজবুত হয়। দ্বিতীয়ত, তিনি রেলমন্ত্রীকে জানান, বর্তমানে যে ট্রেনগুলি চলাচল করছে, সেগুলির সময়সূচি বহু ক্ষেত্রেই যাত্রীদের সুবিধার সঙ্গে মেলে না। সেই সময়সূচি পুনর্বিন্যাস করার আর্জি জানান তিনি।
তৃতীয়ত, বহু গ্রামীণ ও ছোট স্টেশনে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের স্টপেজ না থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ হচ্ছে। সেই স্টপেজগুলির পুনর্বিবেচনা চেয়ে অনুরোধ করা হয়। পাশাপাশি, দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা পুরুলিয়া–ঝাড়গ্রাম রেল প্রকল্প দ্রুত সম্পূর্ণ করার উপরও জোর দেন সাংসদ। এ ছাড়া, পুরুলিয়া থেকে যেসব ট্রেন বর্তমানে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাচ্ছে, সেগুলির রুট সম্প্রসারণ করে আরও বড় শহরের সঙ্গে সংযোগ তৈরির দাবিও তোলেন তিনি। সাংসদের ষষ্ঠ দাবি ছিল জেলার সামগ্রিক রেল পরিকাঠামো উন্নয়নে অতিরিক্ত বরাদ্দ।
বৈঠক শেষে সাংসদ জানান, “মাননীয় রেলমন্ত্রী মনোযোগ দিয়ে সব দাবিই শুনেছেন। বেশ কিছু বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে। পুরুলিয়ার মানুষ যাতে আরও ভালো পরিষেবা পান, তার জন্যই এই উদ্যোগ।”
বিধানসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে গতি আনতে চাইছে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জেলার রেল ব্যবস্থায় দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে পারলে নির্বাচনী লড়াইয়ে সুবিধে হবে বিজেপির।
পুরুলিয়া–ঝাড়গ্রাম রেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে শুধু জেলার নয়, গোটা জঙ্গলমহল অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নের দরজা খুলবে। তবে বাস্তবে সেই কাজ কবে শেষ হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, ট্রেনের সময়সূচি, স্টপেজ এবং সংযোগ ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরেই বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে পুরুলিয়াবাসীকে। যদি এবার সাংসদের তৎপরতায় কিছু ফল মেলে, তবে তা নিঃসন্দেহে জেলার জন্য বড় প্রাপ্তি হবে।
Post Comment