insta logo
Loading ...
×

শহরে পানীয় জলের সংকটে হাহাকার, কাঁসাইয়ে বাঁধ গড়ে স্থায়ী সমাধানের খোঁজে পুরুলিয়া পুরসভা

শহরে পানীয় জলের সংকটে হাহাকার, কাঁসাইয়ে বাঁধ গড়ে স্থায়ী সমাধানের খোঁজে পুরুলিয়া পুরসভা

নিজস্ব প্রতিনিধি , পুরুলিয়া :

পুরুলিয়া পুর শহরে এখনও পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকই বাকি। আর সেই কারণেই বর্ষার জল ধরে রাখার পরিকল্পনায় কাঁসাই নদীর বুকে বাঁধ বা চেক ড্যাম তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে রাজ্যের কাছে। জেলার প্রশাসনের সঙ্গে যৌথ বৈঠকে উঠে এসেছে একগুচ্ছ প্রস্তাব।

২০২০ সালে ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্রান্ট ফান্ড থেকে প্রায় ৬ হাজার বাড়িতে জল সংযোগ দেওয়া হয়। এরপর ২০২৪ সালের গোড়া থেকে শুরু হয় অমরুত-টু প্রকল্প। সেই প্রকল্পে ২১ হাজার ১২৪টি বাড়ি বাড়ি সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেয় পুরসভা। এখনও পর্যন্ত দেওয়া গিয়েছে ১২ হাজার ৫০০টি। অর্থাৎ এখনও বাকি প্রায় ৮ হাজার ৫০০ সংযোগ।

পুরুলিয়া পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ব্যাকওয়ার্ড ফান্ড ও অমরুত প্রকল্প মিলিয়ে মোট ১৭ হাজার সংযোগ দেওয়া গেছে। অথচ হোল্ডিং সংখ্যাই ৩৫ হাজারের কাছাকাছি। সঙ্গে রয়েছে বহু আবাসন ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। ফলে প্রতিদিনের পানীয় জলের চাহিদা ২৫.৬১ এমএলডি হলেও, বর্তমানে মিলছে মাত্র ১০ এমএলডি। গ্রীষ্মকালে সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়ায় মাত্র ৫ এমএলডি-তে। ফলে সমস্যার বহর শহরের পরতে পরতে।

এই অবস্থায় পানীয় জলের উৎস রক্ষা করতেই কাঁসাই নদীতে চেক ড্যাম নির্মাণের উদ্যোগ নিতে চলেছে পুরসভা। ইতিমধ্যে ১৫ জুলাই জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন মিউনিসিপাল অ্যাফেয়ার্স দপ্তরের আধিকারিক, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর, ইরিগেশন ডিভিশন, মিউনিসিপাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডাইরেক্টরেট, জাইকা প্রকল্পের প্রতিনিধি, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের কর্তা, পুরসভা ও ন্যাবকনসের ইঞ্জিনিয়াররা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বর্ষার সময় কাঁসাই দিয়ে গড়িয়ে যাওয়া জল সংরক্ষণের জন্য নদীর বুকেই বাঁধ তৈরি করতে হবে।

পুরুলিয়া পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেন, “পুর শহরের পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে আমরা চাই স্থায়ী ব্যবস্থা। এর আগেও জল আনার নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল—মুকুটমণিপুর, পাঞ্চেত, মুরগুমা—সবই অধরা। এবার তাই আমরা চাই কাঁসাই নদীকেই ভরসা করে প্রকল্প গড়ে তোলা হোক।”

পুরসভা সূত্রে খবর, এই প্রস্তাব রাজ্যের নগরোন্নয়ন ও পুর দপ্তরের কাছে পাঠানো হবে। অমরুত প্রকল্পের আরবান ইনফ্রাস্ট্রাকচার এক্সপার্ট কালীপ্রসন্ন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বাঁধ বা চেক ড্যাম তৈরি হলে শুধুমাত্র পুরুলিয়া শহর নয়, তার পারিপার্শ্বিক অঞ্চলও উপকৃত হবে। ভূগর্ভস্থ জল রিচার্জ হবে, পর্যটনের পরিকাঠামোও শক্তপোক্ত হবে।”

জানা গিয়েছে, আগেও চেক ড্যাম তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেই সব ড্যাম বর্ষার জলে ভেসে যায়। মুকুটমণিপুর থেকে জাইকা প্রকল্পের মাধ্যমে জল আসতে এখনও দু’বছর বাকি। অথচ ততদিন বসে থাকলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে বলেই মত কর্তৃপক্ষের। তাই রাজনৈতিক ভাবেও এই প্রকল্পের অনুমোদন দ্রুত হলে ২৬ নির্বাচনের আগে সুবিধাজনক হবে শাসক দলের পক্ষেও।

Post Comment