সুইটি চন্দ্র, পুরুলিয়া:
পুরুলিয়া শহরের সাধুডাঙা এলাকায় ফের দেখা দিল জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ। বারবার পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো সত্ত্বেও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের অধীনে থাকা রেল আউটলেট সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা রবিবার বিকেল সাড়ে চারটে থেকে রেল অবরোধে নামেন। আদ্রা-চান্ডিল শাখার রেলপথে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলা এই বিক্ষোভে বন্ধ হয়ে যায় একাধিক ট্রেন চলাচল।
অবরোধের জেরে রাঁচি-আসানসোল প্যাসেঞ্জার, আসানসোল-বরাভূম প্যাসেঞ্জার সহ বেশ কয়েকটি ট্রেন পুরুলিয়া স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনে শামিল হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পুরুলিয়ার বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ও। তাঁর বক্তব্য, “রেলের উদাসীনতার ফলেই সাধুডাঙার মানুষজন বারবার জলবন্দি হচ্ছেন। আমি রেলের ঠিকাদারকেও প্রশ্ন করেছি, কেন কাজ হচ্ছে না? উত্তরে তাঁরা জানান, রেলের অনুমতি নেই। এ কেমন কাজ?”
রবিবার, সাধুডাঙা সহ শহরের জলমগ্ন এলাকার সমস্যা নিয়ে আরও কড়া অবস্থান নেন পুরুলিয়া পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিভাসরঞ্জন দাস। তাঁর নেতৃত্বে একাধিক কাউন্সিলর পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর কার্যালয় ঘেরাওয়ের ডাক দেন। তাঁদের অভিযোগ, “সাংসদ রেলের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।”

পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেন, “গত নভেম্বর মাসেই রেলকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছিল সমস্যার কথা। গত মাসের নিম্নচাপের প্রথম বৃষ্টিতেই সাধুডাঙা প্লাবিত হয়। রেলের কর্মকর্তারা এলাকা ঘুরেও দেখেছেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই মেলেনি।” পুরসভার অনুরোধ ছিল, বন্ধ হয়ে যাওয়া পুরনো আউটলেটটি আবার চালু করার। কিন্তু রেল নতুন আউটলেট তৈরির পক্ষে। তবে সেই কাজের গতি অত্যন্ত শ্লথ। পাথর ভাঙার কাজ এখনো শুরু হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে।
রেলের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, পাম্পের মাধ্যমে জল বের করে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী চার দিনের মধ্যেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হবে বলেও আশ্বাস মিলেছে।
এলাকার বাসিন্দা রেখা বাউরি ও অঞ্জনা মাহাতো জানান, “পুরসভা পাশে দাঁড়ালেও রেলের ভূমিকা নিয়ে আমরা ভীষণ অসন্তুষ্ট। চার দিনের মধ্যে সমাধান না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব আমরা।”
Post Comment