দেবীলাল মাহাতো, পুরুলিয়া ও অমরেশ দত্ত, মানবাজার:
আবহাওয়া দফতর জানিয়ে দিয়েছে—পুরুলিয়া জেলায় আজ, অর্থাৎ ১৮ই জুন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্টও। তবে বর্ষার এমন জাঁকজমক উপস্থিতির মধ্যেও মুখ গোমড়া জেলার চাষিদের। কারণ একটাই—বর্ষা এলেও বৃষ্টি এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত নয়।
জুন মাসের অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও ২৫২.৯ মিলিমিটার স্বাভাবিক বর্ষার জায়গায় মাত্র ৪১.৫৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গত বছরও এই একই সময় ৬৪ শতাংশ ঘাটতি ছিল বৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রে, এবং তার জেরে আমন ধানের ফলনে পড়েছিল বড় ধাক্কা।

এবারও ছবি প্রায় একই। পুরুলিয়ার কৃষকরা জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত জেলার অধিকাংশ জমিতে বীজতলা তৈরি করাই সম্ভব হয়নি। কৃষি দফতরের এক কর্তা জানান, এই মুহূর্তে জমি তৈরির কাজ ঢিমেতালে” চললেও যদি সময়মতো বৃষ্টি নামে, তা হলে শেষরক্ষা হতে পারে।গুমোট গরমের পর বর্ষা, কিন্তু স্বস্তি কই!
বর্ষার আগমনের আগে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে পুরুলিয়ার আবহাওয়া ছিল গুমোট ও ক্লান্তিকর। তাপমাত্রার তুলনায় বেশি ছিল আপেক্ষিক আর্দ্রতা, যার জেরে জনজীবন ছিল নাজেহাল।
এপ্রিল-মে মাসে অবশ্য জেলায় বেশ কয়েক দফা কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির জেরে আবহাওয়া ছিল ঠান্ডা ও আরামদায়ক। তথ্য বলছে,

মার্চ মাসে স্বাভাবিকের (২২.২ মিমি) তুলনায় হয়েছে ৪১.৯৪ মিমি বৃষ্টি, এপ্রিলে ৩০.৬ মিমির স্থানে বৃষ্টি হয়েছে ৫৯.৭২ মিমি, মে মাসে ৫৯ মিমির বদলে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় তিন গুণ, অর্থাৎ ১৫২.৬২ মিমি।
তবুও কৃষকরা বলছেন, “শীতল বাতাসে তো আর ফসল হয় না, সময়মতো বৃষ্টি না নামলে লাভ নেই।” আশা-আশঙ্কার দোলাচলে পুরুলিয়ার কৃষিজগৎ।
পুরুলিয়ার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) আদিত্য দুয়ারী বলছেন, “এখনও সময় আছে। গত বছরও জুনে ঘাটতি ছিল, পরে সেটা মিটে গিয়েছিল। তবে ঠিক সময় বর্ষা না নামলে আমনের ফলনে সমস্যা হবেই।”
Post Comment