insta logo
Loading ...
×

সুইসা ট্রিপল মার্ডারে মিলেছে একাধিক সূত্র

সুইসা ট্রিপল মার্ডারে মিলেছে একাধিক সূত্র

নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঘমুন্ডি:

ঝাড়খন্ডের সীমান্ত ছুঁয়ে থাকা পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডির সুইসায় মা, মেয়ে ও মাসিকে খুনের রহস্য আরও ঘনীভূত। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে খড়গপুর রেল পুলিশ সুপার দেবশ্রী সান্যালের নেতৃত্বে জিআরপির আধিকারিকরা তদন্ত চালান। আর তাতেই বেরিয়ে আসে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

▪️তৃতীয় ব্যক্তি?

রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত কাজল মাছুয়ার বিকেল চারটে নাগাদ তাঁর মেয়ে রাখি (৭) ও বোন রাধা (১৩)-কে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন মোবাইল মেরামতের কাজে। পরিবার–পরিজন ছাড়া এই খবর যে কেউ জানত, সে ‘তৃতীয় ব্যক্তি’ এখন তদন্তকারীদের সন্দেহের কেন্দ্রে। সেই ব্যক্তিই কি খুনি? নাকি তাঁর সঙ্গে খুনিদের যোগসূত্র?

▪️মোটিভ?

তদন্তকারীদের ধারণা, ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া এবং তাতে জন্ম নেওয়া শত্রুতার জেরেই ঘটে থাকতে পারে এই তিন খুন। পুলিশি সূত্র বলছে, নিহত কাজলের বাপের বাড়িতে এক যুবকের আসা–যাওয়া নিয়ে আগে থেকেই অশান্তি চলছিল। এই সূত্রকেই গুরুত্ব দিচ্ছে রেল পুলিশ।

▪️হত্যাকারী একাধিক?

তবে শুধু একজন নয়—তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল অন্তত দু’জন বা তার বেশি। কারণ, শ্বাসরোধ করে তিনজনকে খুন করা, তার পর প্রমাণ লোপাটের ছক কষে মৃতদেহ রেললাইনে ফেলে দেওয়া—একজনের পক্ষে তা কার্যকর করা প্রায় অসম্ভব। পুলিশের অনুমান, খুনিরা গাড়ি করেই ঘটনাস্থলে আসে এবং গাড়ি করেই দেহ নিয়ে যায়।

▪️মেয়ে – বোনকে হত্যা কেন?

সবচেয়ে ভাবাচ্ছে কেন লক্ষ্যবস্তু কাজল হলেও তাঁর মেয়ে ও বোনকেও হত্যা করা হল? রেল পুলিশের অনুমান, দুই নাবালিকা হয়তো খুনিদের চিনে ফেলেছিল বা হত্যার মুহূর্তের কিছু দেখে ফেলেছিল। তাই তাদেরও সরিয়ে দেয় আততায়ীরা।

▪️খুনির চেনা এলাকা?

তদন্তে উঠে এসেছে আরও একটি সূত্র—প্রথমে রাধার দেহ ট্র্যাকের ধারে রাখা হয়েছিল। পুলিশের মতে, খুনিরা চান্ডিল-মুরি রেলপথে দ্রুতগামী ট্রেনের সময় ঠিকমতো জানত না। তাই পরে কাজল ও রাখির দেহও পাশাপাশি সাজিয়ে রেখে তারা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে। ফলে রেল ও রাজ্য পুলিশের যৌথ ধারণা, কোনও পেশাদার খুনি নয়—বরং নিহতদের পরিচিতই এই খুনের নেপথ্যে। কারণ, পেশাদার অপরাধীরা সচরাচর প্রমাণ লোপাটে এতটা ঝুঁকি নেয় না। ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা খুনির একেবারে চেনা—এটাও নিশ্চিত তদন্তকারীরা।

▪️নিহতের বোনের দাবি

মঙ্গলবার খড়গপুর রেল পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে থেকে একাধিক জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করেন এবং নিহতদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তবে কী কী সূত্র মিলেছে, তা খোলসা করেননি। নিহতের বোন উমা মাছুয়ার দাবি, ‘‘দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার করা হোক।’’ এখন প্রশ্ন—সেই ‘তৃতীয় ব্যক্তি’ আসলে কে? প্রেম ভাঙনের আঘাতেই কি তিনটি প্রাণ চলে গেল? উত্তর খুঁজছে রেল পুলিশ, নজর এখন সুইসার প্রতিটি সিসিটিভি ফুটেজে।

Post Comment