insta logo
Loading ...
×

সাপের দংশনে সচেতনতা শিবির, গুরুত্ব পেল কালাচের বিষপ্রবণতা ও প্রাথমিক চিকিৎসা

সাপের দংশনে সচেতনতা শিবির, গুরুত্ব পেল কালাচের বিষপ্রবণতা ও প্রাথমিক চিকিৎসা

নিজস্ব প্রতিনিধি, রঘুনাথপুর :

সাপ ও সাপের কামড় সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একদিনের একটি বিশেষ শিবিরের আয়োজন করল বন দফতর। কংসাবতী দক্ষিণ বনবিভাগের রঘুনাথ রেঞ্জের উদ্যোগে রঘুনাথপুর কলেজের স্মার্ট হলে অনুষ্ঠিত হয় এই কর্মসূচি। জেলার নানা প্রান্তে লোকালয়, এমনকি স্কুল ও অফিস চত্বরে প্রায়শই সাপের দেখা মেলে। শীত ছাড়া বছরের অন্যান্য সময়ে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ফলে সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

বিগত কয়েক বছর ধরে বন দফতরের লাগাতার প্রচারের ফলে সাধারণ মানুষ এখন আর সাপ দেখলে মেরে ফেলেন না, বরং বনকর্মীদের খবর দেন। বনকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাপ উদ্ধার করে বনাঞ্চলে ছেড়ে দেন। তা সত্ত্বেও, জেলাজুড়ে সাপের কামড়ে বহু মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে শিবিরটির গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়।

এই শিবিরে মুখ্য বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সর্পদংশন প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনার জাতীয় কর্মপরিকল্পনার সদস্য, রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের মনোনীত প্রশিক্ষক ও চিকিৎসক হিমাদ্রী পাল। তিনি জানান, “অনেক সময় মানুষ বিষধর ও নির্বিষ সাপ আলাদা করতে না পারায় আতঙ্ক তৈরি হয়। বিশেষ করে কালাচ সাপের কামড়ে পুরুলিয়া জেলায় মৃত্যুহার তুলনামূলকভাবে বেশি।”

তিনি আরও বলেন, “কালাচ সাপ কামড়ালে অনেক সময় তা প্রথমে বোঝা যায় না। ভোররাতে পেট বা গলা ব্যথা শুরু হলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার। ” এ ধরনের উপসর্গে অবিলম্বে রোগীকে কোনও ওঝা বা গুণিনের কাছে না নিয়ে গিয়ে দ্রুত নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। বলেন, “সময়মতো চিকিৎসা পেলে প্রাণহানি অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব।”

শিবিরে প্রজেক্টরের মাধ্যমে তথ্যচিত্র ও প্রাসঙ্গিক উপস্থাপনার মাধ্যমে সাপের আচরণ, প্রাথমিক চিকিৎসা এবং প্রতিকারের উপায়গুলি তুলে ধরা হয়। এই কর্মসূচিতে রঘুনাথপুর কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) শ্রীনিবাস নন্দি, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অচ্যুতানন্দ পাঠক, মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক সায়ন ঘোষ, রেঞ্জার নিলান্দ্রি সখা সহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যরা, কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

শিবিরটি এলাকার মানুষের মধ্যে সাপ নিয়ে ভীতি দূরসচেতনতা বৃদ্ধি ও বিজ্ঞানভিত্তিক আচরণ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করছেন আয়োজকরা।

Post Comment