নিজস্ব প্রতিনিধি,পুরুলিয়া:
খনি অঞ্চল নিতুড়িয়ার সমস্ত কৃষককে শস্য বীমার আওতায় আনতে উদ্যোগ নিয়েছে ব্লক কৃষি দপ্তর। প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষকদের সচেতন করছেন কৃষি দপ্তরের কর্মীরা। এই প্রচারে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নিতুড়িয়া ব্লকের কৃষি আধিকারিক পরিমল বর্মন।
এই ব্লকে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে এ বছর আমন ধান চাষ করেছেন প্রায় ১৩ হাজার কৃষক। এ বছর বৃষ্টির ঘাটতি নেই, বরং আগের বছরের তুলনায় পুরুলিয়া জেলাজুড়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা মাথায় রেখে সকল কৃষককে বাংলা শস্য বীমার আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন।
কৃষি আধিকারিক পরিমল বর্মন জানান, “সরবড়ি ও দীঘা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু হয়েছে। প্রায় ১০০ জন কৃষককে আবেদনপত্র বিতরণ করা হয়েছে। ধান এবং ভুট্টা – এই দুই ফসলের জন্যই বাংলা শস্য বীমার সুবিধা নেওয়া যাবে।”
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধানের বীমার জন্য আবেদন করার শেষ তারিখ ৩০শে সেপ্টেম্বর এবং ভুট্টার জন্য ৩১শে অগাস্ট। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হলে কৃষকরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে ধানের ক্ষেত্রে প্রতি হেক্টরে ৭৬,৫৭০ টাকা এবং ভুট্টার ক্ষেত্রে প্রতি হেক্টরে ৬৪,২২০ টাকা পর্যন্ত পাবেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এই বীমার জন্য কৃষকদের কোনও প্রিমিয়াম দিতে হবে না; সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার।
বাগমারার কৃষক কৃষ্ণপদ মাহাতো, চাকলতাবাড়ির কৃষক আশীষ মণ্ডল, দিলীপ মণ্ডল এবং বড়লাল টুডু জানান, “এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টির কারণে উঁচু বাঈদ ও কানালী জমিতেও আমন ধানের চাষ ভালো হয়েছে। কারও ১০ বিঘা, কারও আবার ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমিতে ধান লাগানো হয়েছে। গাছের বৃদ্ধি চমৎকার, পোকামাকড়ের উপদ্রবও নেই। এখন যদি কোনো কারণে ফসল নষ্ট হয়, তবে সমস্যায় পড়তে হবে। তাই ফসলের বীমা করাচ্ছি এবং অন্য কৃষকদেরও এই বীমার সুবিধা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।”
এই উদ্যোগে ব্লক কৃষি দপ্তরের আশা, সচেতনতা বাড়লে নিতুড়িয়া ব্লকের প্রায় সব কৃষকই বাংলা শস্য বীমার সুবিধার আওতায় আসবেন, যা তাদের আর্থিক সুরক্ষা দেবে এবং চাষাবাদের ঝুঁকি কমাবে।
Post Comment