নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া :
শারদোৎসবের আগমনী সুর বেজে উঠছে জঙ্গলমহলে। তবে ঢাকের কাঠির শব্দে এখনই মা দুর্গা আসছেন না। আগেভাগে আসছেন তাঁর অগ্রদূত, তাঁর প্রিয়পুত্র বিনায়ক। পুরুলিয়ার বিভিন্ন অংশ মাতোয়ারা এখন গণেশ বন্দনায়।
ঐশ্বর্য আর সমৃদ্ধির আরাধনায় গণেশ পুজোর ঝলক প্রতি বছরই বাড়ছে। এ বার পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ার পারবেলিয়ার সরস্বতী ক্লাবের বাজেট ছুঁয়েছে সতেরো লক্ষ টাকা। সোমবারই উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে এই আয়োজনের। মণ্ডপ টানা থাকবে দশ দিন। থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যাত্রা, আলোচনা সভা, চক্ষু শিবির, রক্তদান শিবিরের মতো নানা কর্মসূচি।

পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতোর হাত ধরে উদ্বোধন হয় পুজোর। সহ-সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও উপস্থিত ছিলেন। ৬৫ ফুট উঁচু মণ্ডপটি নেপালের বিখ্যাত জানকী মন্দিরের আদলে তৈরি। তাই শুধু জেলার মানুষ নন, ঝাড়খণ্ড থেকেও ভিড় জমছে দর্শনার্থীদের। মণ্ডপকে ঘিরে বসেছে মেলা। জমে উঠেছে স্থানীয় অর্থনীতিও।
আড়শার সিরকাবাদ সার্বজনীন গণেশ পুজো কমিটিও নজর কাড়ছে কয়েক বছর ধরে। নিতুড়িয়ার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শান্তিভূষণ প্রসাদ যাদব বলেন, ‘‘বেশ কয়েক বছর ধরেই গণেশ পুজোকে ঘিরে মানুষের উন্মাদনা বাড়ছে। তার ফলেই চাঙ্গা হচ্ছে এলাকার অর্থনীতি।’’ একই সুর সিরকাবাদ পুজো কমিটির আর এক সদস্য মানস মণ্ডলের কণ্ঠেও। “গত কয়েক বছর ধরেই গণেশ পুজোকে ঘিরে উন্মাদনা বেড়েছে। সেই উচ্ছ্বাসই এখন গ্রামের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করছে।”
আলোসজ্জায় ঝলমল করছে গ্রামগঞ্জ। ঢাক-ঢোলের তালে মাতোয়ারা অলিগলি। প্রতিমা শিল্পী, বাঁশ-তাঁতের কারিগর, আলোসজ্জার কারিগর, ফুল বিক্রেতা—সবাই বাড়তি রোজগারের সুযোগ পাচ্ছেন। মিষ্টির দোকানগুলোয় দিনরাত কাজ চলছে। মতিচুরের লাড্ডু ও মোদকের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। বিশ্বাস, এগুলোই গণপতির প্রিয় নৈবেদ্য।
দুর্গাপুজোর আগে গণেশ পুজোই এখন হয়ে উঠছে জঙ্গলমহলের একটা বড়ো অংশের মহা-উৎসব, শারদোৎসবের সত্যিকারের অগ্রদূত।









Post Comment