insta logo
Loading ...
×

শিক্ষার আলো পেতে আজও প্রাণ হাতে নদী পেরোয় কুদাগাড়া

শিক্ষার আলো পেতে আজও প্রাণ হাতে নদী পেরোয় কুদাগাড়া

নিজস্ব প্রতিনিধি,ঝালদা:

প্রত্যন্ত গ্রাম পুরুলিয়ার কুদাগাড়া। ১৯৬২ সালে এখানে যাত্রা শুরু হয়েছিল একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের—উদ্দেশ্য ছিল গ্রামের শিশুদের শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু ২০২৫-এর এই আধুনিক যুগেও সেই বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য নেই কোনো পাকা রাস্তা। ফলে আজও বই-খাতা হাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে স্কুলে যায় শিশু-কিশোররা।

স্থানীয় ছাত্র উমেশ মাহাতো জানায়, “বর্ষায় নদীতে জল থাকলে আমরা স্কুলে যাই না, খুব ভয় লাগে।” শুধু উমেশ নয়, গোটা গ্রামের মানুষই একই অভিজ্ঞতার সাক্ষী। প্রবীণ বাসিন্দা খুনু মাহাতো, ধুমা ও বুড়া লাইয়া বলেন, “আমরাও ছোটোবেলায় এই পথেই স্কুলে গেছি। আজ আমাদের ছেলেমেয়েরাও সেই একই কষ্টে।”

গ্রামেরই গুণধর মাহাতো শিশুদের যাতায়াত কিছুটা সহজ করতে নিজের জমির একটি অংশ ছেড়ে দিয়েছেন। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “ভবিষ্যতে যদি বাড়ি তৈরি করতে হয়, তখন আর জমি ছাড়তে পারব না। তাই এখনই চাই স্থায়ী সমাধান।”

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জনক সিং মুড়া জানান, “২০১০ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিষয়টি জানিয়েছি। তবু কোনো পদক্ষেপ হয়নি। বর্তমানে ৬৫ জন ছাত্রছাত্রী ও ২ জন শিক্ষককে বাইরের গ্রামে মোটরসাইকেল রেখে পায়ে হেঁটে আসতে হয়।”

জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো স্বীকার করেছেন, “এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে এবং দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”

শিক্ষা আলোর পথ দেখালেও, কুদাগাড়ার শিশুদের সেই আলোয় পৌঁছাতে আজও পেরোতে হয় এক নদী অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকির স্রোত।

Post Comment