নিজস্ব প্রতিনিধি, চান্ডিল:
ভোররাতের নীরবতা ভেঙে এক তীব্র শব্দে কেঁপে উঠল দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের আদ্রা ডিভিশনের চাণ্ডিল জংশন। শনিবার ভোর প্রায় চারটের সময়, টাটানগর থেকে পুরুলিয়াগামী লোহা বোঝাই একটি মালগাড়ি চাণ্ডিল স্টেশন ছাড়ার পর হঠাৎ ডাউন লাইনে লাইনচ্যুত হয়ে যায়। দ্রুতগতির কয়েকটি ওয়াগন ছিটকে গিয়ে ধাক্কা মারে বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি মালগাড়ির বগিতে। মুহূর্তেই দ্বিতীয় ট্রেনের কয়েকটি বগিও উলটে পড়ে।
সৌভাগ্যক্রমে, দুর্ঘটনার সময় কোনো যাত্রীবাহী ট্রেন ওই রুটে ছিল না। ফলে বড়সড় প্রাণহানির ঘটনা এড়ানো গেল। তবে ঘটনায় রেল চলাচল সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে পুরুলিয়া–চাণ্ডিল শাখায়। রাতের অন্ধকার ভেদ করে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা এবং শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। ভারী ক্রেন এনে একে একে লাইনচ্যুত ওয়াগন সরানোর কাজ চলছে।

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম মালগাড়ির অন্তত ১০টি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়। সংঘর্ষের ধাক্কায়ভাবে দ্বিতীয় মালগাড়িরও একাধিক বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনার সঠিক কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। রেলওয়ের তদন্ত দল সিগন্যালিং সিস্টেম, ট্র্যাকের অবস্থা এবং ট্রেনের গতিবেগ—সব কিছু খতিয়ে দেখছে।

এই ঘটনার জেরে রাঁচি–হাওড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেস-সহ ২০টিরও বেশি যাত্রীবাহী ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। অনেক ট্রেন ঘুরপথে চালানো হলেও যাত্রীদের দুর্ভোগ কাটেনি। পুরুলিয়া, আদ্রা, চাণ্ডিলসহ আশপাশের স্টেশনগুলোতে আটকে পড়েছেন হাজারও যাত্রী। রাখির দিনে সময়মতো পরিবারের কাছে পৌঁছাতে না পেরে যাত্রীদের ক্ষোভ তীব্র হচ্ছে।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের সতর্ক করে দিয়েছে—টাটানগর–পুরুলিয়া রুটে ভ্রমণের আগে সর্বশেষ ট্রেন আপডেট দেখে নেওয়া বাধ্যতামূলক। আপাতত বিকল্প রুট বা সড়কপথকেই বেশি নিরাপদ বলে জানানো হয়েছে। আজই ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে কিনা, তা এখনও অনিশ্চিত।
Post Comment