insta logo
Loading ...
×

লক্ষ্মীপুজোর আগে বাজারে আগুন! এ কী কাণ্ড!

লক্ষ্মীপুজোর আগে বাজারে আগুন! এ কী কাণ্ড!

সুইটি চন্দ্র , পুরুলিয়া:

রাত পোহালেই কোজাগরী পূর্ণিমা। মা লক্ষ্মীর আরাধনায় ঘরে ঘরে মেতে উঠবে বাঙালি । ধান, দুধ, ফল, ফুল, প্রদীপের আলোয় সাজবে উঠোন। কিন্তু তার আগে বাজারের ছবি বলছে—পুজোর প্রস্তুতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চড়ছে বাজারদরও।

সবজির বাজারে দাম কিছুটা ওঠানামা করলেও ফলের দরে যেন আগুন লেগেছে। ফুলকপি, পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়শ—সবই এখন কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৭০ টাকার ঘরে। আগে যেখানে ফুলকপি ৮০ টাকায় মিলত, এখন তা ১০০ থেকে ১২০ টাকা। পটল, ঝিঙে—যেগুলি কিছুদিন আগেও ৩০-৪০ টাকায় পাওয়া যেত, এখন কেজি প্রতি ৫০-৬০ টাকা। টমেটো ৪০, গাজর ৬০-৭০, বরবটি ৬০, সিম ১৮০, বিনস ১৬০ টাকা কেজি। কচু ৪০, লাউ ৩০ টাকায় মিলছে। আদা, রসুন, পেঁয়াজের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল—ভালো পেঁয়াজ ২৪, সাধারণ ২০ টাকা, আদা ৬০, রসুন ৫০।

তবে গৃহিণীদের সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে ফলের বাজারে। পুজোর কলা ডজন প্রতি ৫০ টাকা, আপেল ৮০ থেকে ১২০, গ্রিন আপেল ৩৫০-৪০০, দার্জিলিং কমলালেবু ৩৫০ টাকা কেজি। কিন্তু নজর কাড়ছে বেদানার দাম—আগে যেখানে বড় বেদানা মিলত ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, সেখানে এখন দাম উঠেছে কেজি প্রতি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায়! ছোট বেদানাও বিকোচ্ছে ৮০০ টাকার আশেপাশে। ফল ব্যবসায়ীদের দাবি, “সরবরাহ কম, পাইকারি বাজারেই দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।”

নাসপাতি ১০০, বারুইপুর পেয়ারা ১২০, সাধারণ পেয়ারা ৬০, লাল আঙুর ৪০০, সাধারণ আঙুর ২০০, আনারস একটি ১০০, বাতাবি লেবু ৫০ টাকায় বিকোচ্ছে। মালতা ২৫০, মুসাম্বি ও কমলালেবু ১০০ টাকা কেজি। বড় ডাব ৬০, ছোট ৫০, নারকেল ৪০-৬০ টাকা। জানালেন ফল বিক্রেতা সাত্তার আনসারি।

ফুলের বাজারও পুজো ঘনিয়ে আসতেই জমে উঠেছে। গাঁদা মালা ৩০, লাল জবা মালা ৫০, অপরাজিতা ১৫, শিউলি ও সাদা মালা ১০ টাকা। ধানের শিসের ঝুরি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। ঝুরো লাল গাঁদা ৮০-৯০, হলুদ গাঁদা ১৩০-১৫০ টাকা কেজি। তিন ফুট সাইজের গাঁদা মালা লাল রঙের ১৫-১৮, হলুদ রঙের ২৫-৩০ টাকা। হাজার জবার কুঁড়ির দাম উঠেছে ৫০০ টাকায়। জানাচ্ছেন ফুল বিক্রেতা

প্রতিমার বাজারেও ব্যস্ততা চরমে। কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণির ছাঁচের প্রতিমা বিকোচ্ছে ১৩০ টাকা থেকে ১২০০ টাকায়। মাঝারি থেকে বড় প্রতিমার দাম ১৫০০ থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে।

সবজি বিক্রেতা রতন বাউরির কথায়, “লক্ষ্মীপুজোর আগে সরবরাহ কমে গেলেই দাম একটু চড়ে। তবু লোকজন কিনছেন, কারণ মা লক্ষ্মীর ঘরে তো অভাব মানায় না।”

বাজার ঘুরে দেখা গেল, ফুল, ফল, প্রদীপ, ধানের আঁটি হাতে নিয়ে ফিরছেন ক্রেতারা। কারও মুখে হালকা অভিমান—“দাম অনেক বেড়েছে।” কারও চোখে উচ্ছ্বাস—“পুজোর উৎসবে অভাবের কথা বলি কীভাবে!”

কোজাগরীর রাতে তাই আলো জ্বলবে প্রতিটি ঘরে—প্রার্থনা একটাই, মা লক্ষ্মী যেন দেন ঐশ্বর্য, দেন শান্তি ও আশীর্বাদের আলো।

Post Comment