সুইটি চন্দ্র, পুরুলিয়া :
অন্যান্য বছরের মতো এবছরও পুরুলিয়া জেলার জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হল ১১তম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। অনুষ্ঠানের সূচনায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সম্প্রচার উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে এক বিশেষ উদ্দীপনার সৃষ্টি করে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শক্তি সংঘ ক্লাবের যোগ প্রশিক্ষক মিলন দত্ত এবং তাঁর প্রশিক্ষিত ছাত্র-ছাত্রীরা। তাঁরা চমৎকারভাবে বিভিন্ন যোগাসন ও রিদমিক যোগ প্রদর্শনের মাধ্যমে দিনের তাৎপর্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা যোগব্যায়ামের ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিশদে আলোচনা করেন। ইতিহাসবিদদের মতে, যোগাচর্চার সূচনা আজ থেকে প্রায় ৫০০০ বছর পূর্বে, সিন্ধু সভ্যতার সময়ে। সেই সময় শরীর ও মনকে সমন্বয় করার জন্য যোগের প্রয়োগ শুরু হয়। পরবর্তীকালে এটি শুধুমাত্র আত্মিক সাধনার পথ হিসেবে নয়, বরং শারীরিক সুস্থতা রক্ষার উপায় হিসেবেও বিবেচিত হতে থাকে।
বর্তমানে যোগাসন একটি বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যায়ামপদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃত, যা শুধু শরীর নয়, মনের উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ২০২০ সালে ভারত সরকার যোগাসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে খেলাধুলা বা স্পোর্টস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যোগব্যায়াম আমাদের শৃঙ্খলা, চারিত্রিক দৃঢ়তা, একাগ্রতা ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। প্রাণায়ামের মাধ্যমে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশল আয়ত্ত করে হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখা এবং হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণ করাও সম্ভব হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রশিক্ষকরা বলেন, যোগব্যায়াম কেবল পেশী গঠন বা বাহ্যিক শক্তির ওপর নির্ভর করে না, এটি আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে সঠিক রাখে এবং দৈনন্দিন জীবনের মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়।
যোগচর্চার মূল আটটি স্তম্ভ—যম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম, প্রত্যাহার, ধারণা, ধ্যান ও সমাধি—এই প্রতিটি ধাপেই নিহিত রয়েছে মানব জীবনের সামগ্রিক উন্নয়নের দিশা।
পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রের এই উদ্যোগ সাধারণ মানুষের মধ্যে যোগচর্চা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে বলেই মত অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের।
Post Comment