পুরুলিয়া মিরর ডিজিটাল ডেস্ক:
টানা বৃষ্টিতে ভেসে গেল ত্রাণ শিবির-ই। পুরুলিয়া পুরসভার বেহাল নিকাশিতে জল বার হওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় এই পুর শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ত্রাণ শিবির সাধুডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার রাত দুটো নাগাদ জল ঢুকতে শুরু করে।
ওই শিবিরে ঘুমিয়ে থাকা মানুষজন চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেন। তবে রাতেই পদক্ষেপ নেয় পুরুলিয়া পুর প্রশাসন। পুরুলিয়া পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীরদল ওই এলাকায় গিয়ে লাইফ জ্যাকেটের সাহায্যে সকাল পর্যন্ত তাদেরকে উদ্ধার করেন। প্রায় ৪০ জনকে উদ্ধার করা হয় বলে পুরুলিয়া পুরসভার তরফে জানানো হয়।

পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি জানান, ওই পীড়িত মানুষজন আপাতত ওভারব্রিজের নিচে রয়েছেন। রাতের বেলায় একটি স্থানীয় হোটেলে পুরসভার তরফে পাঠানো হবে। কয়েকজনকে অবশ্য হোটেলেই রাখা হয়েছে। পুরসভার তরফে খাবার দেওয়ার পাশাপাশি বস্ত্র বিলি করা হচ্ছে।
আবহাওয়া দপ্তর থেকে জানানো হয়েছিল, শুক্রবার
বিকাল থেকে মেঘ ধীরে ধীরে পরিষ্কার হতে শুরু করবে।কিন্তু এদিনের বেলা সাড়ে টার আবহাওয়া দেখে বোঝা যাচ্ছে না যে মেঘ পরিষ্কার হবে। ফলে বৃষ্টি চলছেই।
পুরুলিয়া কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার
সকাল সাড়ে আটটা থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত গড়ে ৯২.৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ঝালদা ১ নম্বর ব্লকে। ওই এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২১৬.৮ মিলিমিটার। এদিকে এখনও

বরাবাজারের নেঙসাই নদীতে হড়পা বানে ভেসে যাওয়া বৃদ্ধের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার বিকালে সাধারণ প্রশাসনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলার বাহিনী ও রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের ৭ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের সদস্যরা একসাথে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। বোট নামিয়ে উদ্ধার কাজ চললেও জলের স্রোত তীব্র থাকায় উদ্ধারকার্য চালাতে গিয়ে তারাই সমস্যায় পড়ে যান। ফলে সন্ধ্যের মুখে
কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। সাধারণ প্রশাসনের ওই টিম
ফেরত গেলেও রাজ্য পুলিশের ৭ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা
রীতিমতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধারকার্য চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ওই নদীর কজওয়ের উপর দিয়ে বরাবাজার-মানবাজার সড়কে যান চলাচল শুরু হয়ে গিয়েছে। একইভাবে যান চলাচল চলছে প্রায় একদিন বন্ধ থাকা পুরুলিয়ার বান্দোয়ান- বাঁকুড়ার ঝিলিমিলি সড়কে কুইলাপাল সেতু দিয়েও। পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা জুড়ে আরও অন্যান্য কজওয়েগুলি থেকেও জল নামতে শুরু করেছে।

এদিকে আড়শার বেলডি সেতুতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে ওই সেতু দিয়ে সমস্ত যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আকাশে মেঘ থাকায় দুশ্চিন্তা কাটছে না পুরুলিয়ার। মঙ্গলবার রাত থেকে দু’দিনের বৃষ্টিতে শহর পুরুলিয়া সহ জেলার একাধিক এলাকা যেভাবে জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে তা রীতিমতো অবাক করা ছবি এই রুখাশুখা পুরুলিয়ায়। এখনও জেলার বহু চাষের জমি জলের তলায়। ক্ষতি হতে পারে সবজিরও। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেলার সবজি কৃষকরা।
Post Comment