নিজস্ব প্রতিনিধি,কাশিপুর:
যে ভাষা সারা দেশকে দিয়েছে জাতীয় সংগীত, যে ভাষা সারা দেশকে দিয়েছে স্বদেশ মন্ত্রে দীক্ষা, সেই বাংলা ভাষায় কথা বলার অপরাধে তেলেঙ্গানায় মারধরের শিকার হলেন পুরুলিয়ার কাশীপুরের নামোপাড়ার পরিযায়ী শ্রমিক সোমনাথ ধীবর (২৮)। হায়দ্রাবাদের কোন্ডাপুর এলাকায় গত ২৬ আগস্ট বিকেলে ঘটে এই ঘটনা। অভিযোগ, স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে বাংলায় কথা বলছিলেন সোমনাথ। সেই সময়ই এক সিকিউরিটি ইনচার্জ জামার কলার ধরে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে একাধিকবার চড়-থাপ্পড় মারেন এবং হুঁশিয়ারি দেন—বাংলা ভাষায় কথা বললে এখানে কাজ হবে না।
আতঙ্কিত সোমনাথ সেদিনই রাজ্যের তৃণমূল নেতা সৌমেন বেলথরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর সহযোগিতায় টিকিট কেটে গত শুক্রবার রাতে তিনি ফিরে আসেন নিজের বাড়ি কাশীপুরের নামোপাড়ায়।
সোমনাথের কথায়, “বাবা মারা যাওয়ার পর ২০১৭ সাল থেকে কর্নাটকে কাজ করছিলাম। কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু হায়দ্রাবাদে গিয়ে এমন হেনস্থা হব, ভাবিনি। এত ভয়ে আছি যে আর কোনওদিন ভিন রাজ্যে কাজের জন্য যাব না।”
জানা গিয়েছে, কর্নাটকে নলকূপ মেরামতের কাজ করতেন সোমনাথ। সেখানে মাসে ১৩,০০০ টাকা রোজগার হলেও হায়দ্রাবাদের একটি কোম্পানি ১৫,০০০ টাকার প্রস্তাব দিলে তিনি নতুন কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২৫ আগস্ট তিনি হায়দ্রাবাদে পৌঁছান, কিন্তু ওই কোম্পানি সঙ্গে সঙ্গেই কাজ দেয়নি। তার পরের দিনই ঘটে যায় এই হেনস্থার ঘটনা।
ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্য তৃণমূলের সম্পাদক সৌমেন বেলথরিয়া। তিনি বলেন, “কেন্দ্রের উদাসীনতায় ১০০ দিনের কাজ বন্ধ থাকায় মানুষকে ভিন রাজ্যে ছুটতে হচ্ছে। সেখানে গিয়ে বাংলায় কথা বললেই অত্যাচার করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রমশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে যারা ঘরে ফিরছেন, তাঁদের জন্য মাসে ৫,০০০ টাকার ব্যবস্থা হয়েছে। সোমনাথের মতো শ্রমিকদেরও কাজের ব্যবস্থাও করা হবে।”
Post Comment