insta logo
Loading ...
×

বেআইনি খনন, ধস পাহাড়িগোড়া পাহাড়ে

বেআইনি খনন, ধস পাহাড়িগোড়া পাহাড়ে

নিজস্ব প্রতিনিধি, পাড়া: বেআইনি খননকার্যেই ধস! যার জেরে হারিয়ে যাচ্ছে
পাহাড়-টিলার সৌন্দর্য। বিপন্ন বন্যপ্রাণ। এমনকি যাতায়াতও হয়ে গিয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ! তবুও হুঁশ নেই প্রশাসনের।

পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকের পাহাড়িগড়া পাহাড়ে নিম্ন চাপের বৃষ্টিতে সম্প্রতি ধস নামে। সেই ধসের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।( ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পুরুলিয়া মিরর )। আচমকা ধস নামতে থাকায় পাড়া এলাকার মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া জেলা শাখা পুরুলিয়ার জেলাশাসক রজত নন্দার কাছে এই বিষয়টি জানিয়ে ওই পাহাড়কে সংরক্ষণ করার দাবি জানিয়েছে। জেলাশাসক রজত নন্দা জানান, ” বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। “

ফি বছরের মত এবারও স্থানীয় মানুষজন করম উৎসবে মাতেন। ওই উৎসবকে ঘিরে নানান নৃত্যানুষ্ঠান ছাড়াও প্রায় ৫০০ গাছ রোপন করেন ওই এলাকার বাসিন্দারা l মূলত পাহাড়কে বাঁচাতেই বেশ কয়েক বছর ধরে এলাকার মানুষ এই করম উৎসবে ওই বৃক্ষরোপণ করে আসছেন। কিন্তু তারপরেই ওই পাহাড়ে ধস নামায় এলাকার মানুষের উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। বাড়ছে আতঙ্ক। পাহাড়ে ধস নামায় সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে তা শুধু নয় l বিপদসংকুল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কারণ সেখানে গবাদি পশু চরে বেড়ায় l এছাড়া ওই বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে হায়না, গোল্ডেন জ্যাকেলের মত বন্যপ্রাণ। রয়েছে ময়ূরওl ফলে বিপদের মুখে পড়েছে ওই সব বন্যপ্রাণ। বাস্তুতন্ত্রেও সমস্যা হচ্ছে l তাছাড়া ওই এলাকায় বিভিন্ন ঔষধি গাছ রয়েছে l পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া জেলা শাখার সম্পাদক নয়ন মুখোপাধ্যায় জানান, ” এই পাহাড়কে বাঁচাতে পাহাড় বাঁচাও কমিটি তৈরি হয়েছিল। ২০২৩ সালের শেষের দিকে আমরা এই বিষয়ে হাইকোর্টে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। তার প্রেক্ষিতেই হাইকোর্ট জেলাশাসককে পদক্ষেপ নিতে বলে রিপোর্ট দিতে বলে। তারপর বন্ধ হয়েছিল পাহাড় কাটা। কিন্তু কোথা থেকে কি হল বোঝা যাচ্ছে না। রীতিমতো ধস নামতে শুরু করেছে। তাই আমরা এই পাহাড় সংরক্ষণ করতে আবার জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলেছি। ” এলাকার মানুষের অভিযোগ, বছরখানেক আগে জেলাশাসক পদক্ষেপ নিলেও
এখন আড়ালে-আবডালে ওই পাহাড়ে বেআইনি খনন চলছে। সেই টিলা-পাহাড়ের পাথর যাচ্ছে বেআইনি ক্রেশারে। ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ওই এলাকার ক্রেশার গুলিতে একাধিক নথিপত্র নেই। অথচ রমরম করে চলছে ওই বেআইনি ক্রেশার। মাঝে মধ্যে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর, সাধারণ প্রশাসন ও পুলিশ হানা দিলে তা বন্ধ থাকে। কিছুদিন পর আবার শুরু হয়ে যায় বেআইনি সব ক্রেশার। সেই কারণেই পাহাড় কেটে তার পাথর যাচ্ছে ওই ক্রেশার গুলিতে। বিজ্ঞান মঞ্চ জানিয়েছে, ওই পাহাড়কে সংরক্ষণ করার জন্য বেশি করে সেখানে বৃক্ষ রোপণ প্রয়োজন। বোল্ডার বা অন্য কিছু দিয়ে তা ফিলিং করতে হবে। না হলে পাহাড়ে ধস
এলাকায় কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করবে।

Post Comment