insta logo
Loading ...
×

বিপত্তারিনী পুজোয় পুরুলিয়ার মন্দিরে ঢলভক্তদের

বিপত্তারিনী পুজোয় পুরুলিয়ার মন্দিরে ঢলভক্তদের

নিজস্ব প্রতিনিধি, মানবাজার ও ঝালদা:

আষাঢ় মাসের এক শুভ মঙ্গলবার। সকাল হতেই পুরুলিয়ার মানবাজার শহর জুড়ে নেমে এল এক আধ্যাত্মিক আবহ। ধর্মবিশ্বাসে গাঁথা বিপত্তারিণী ব্রত উপলক্ষে শহর ও তার আশেপাশের এলাকাগুলি মেতে উঠল ভক্তিরসে। মা দুর্গার বিশেষ রূপ ‘বিপত্তারিণী’ রূপে আজ পূজিতা হলেন—যিনি সংসারের নানা বিপদ থেকে রক্ষা করেন সন্তান-পরিবারকে।

রথযাত্রার সময়কালে শুক্লা দ্বিতীয়া এবং দশমীতে পালিত হয় এই ব্রত। বিশেষ করে গৃহস্থ মহিলাদের মধ্যে এই ব্রতের মাহাত্ম্য ও জনপ্রিয়তা প্রবল। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ওড়িশা ও অসমেও এই ব্রতের প্রচলন রয়েছে।

ভক্তি ও আস্থার এক নিদর্শন হয়ে প্রতি বছর এই ব্রত পালন করেন বহু মহিলা। মানবাজারের গৃহবধূ পুতুল কুন্ডু জানালেন,
“প্রতি বছরই এই ব্রত করি। সংসার আর সন্তানদের মঙ্গলের জন্য মা বিপত্তারিণীর শরণ নিই। উনিই আমাদের রক্ষা করেন, সেই বিশ্বাসেই আমাদের পথ চলা।”

অন্যদিকে, একইরকম দৃশ্য দেখা গেল ঝালদা শহরের ছুতার দুর্গা মন্দিরেও। ভোর থেকে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি আর ধূপ-ধুনোর গন্ধে মুখরিত মন্দির চত্বর। সেখানেও বিপুল সংখ্যক ভক্তের সমাগমে সম্পন্ন হল পুজোর আয়োজন।পুরোহিত মদন বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন
“এই ব্রতের মূল উদ্দেশ্য সন্তানের মঙ্গল ও পরিবারের সুরক্ষা। আদিকাল থেকে মহিলারা এই ব্রত পালন করে আসছেন। ১৩ ধরনের ফুল ও ফল দিয়ে দেবীকে তুষ্ট করা হয়।” ব্রতবতী পূর্ণিমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় উঠে এল এক গভীর বিশ্বাসের ছবি
“এটা শুধু পুজো নয়, এটা আমাদের ভরসা। মা যা চাই, তাই দেন—কখনও খালি হাতে ফেরান না।”

শহর থেকে গ্রাম, মানবাজার থেকে ঝালদা—আজকের দিনে যেন ছড়িয়ে পড়ল এক চিরন্তন সংস্কৃতির সুর। মা বিপত্তারিণীর আশীর্বাদে যেন সকল ভক্তের জীবন সুরক্ষিত ও আলোকময় হয়ে ওঠে—এই প্রার্থনার মধ্য দিয়েই শেষ হল আজকের বিপত্তারিণী ব্রত।

Post Comment