নিজস্ব প্রতিনিধি, রঘুনাথপুর :
ঘুমন্ত স্ত্রী ও দুই নাবালক সন্তানকে কুপিয়ে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত গৌতম মাহাতকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিল রঘুনাথপুর মহকুমা আদালত। কাশিপুর থানার রাঙ্গাডি গ্রামের বাসিন্দা গৌতম মাহাত ২০২২ সালের ২৭ মার্চ গভীর রাতে এই নৃশংস ঘটনা ঘটায়।
সরকারি আইনজীবী জাকির আনসারি জানান, তথ্যপ্রমাণ পর্যালোচনার পর আদালতের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জজ প্রিয়ব্রত চট্টোপাধ্যায় এই ঘটনাকে “বিরল থেকে বিরলতম” আখ্যা দিয়ে মঙ্গলবার ফাঁসির রায় দেন।
ঘটনার দিন ভোররাতে তৎকালীন কাশিপুর থানার ওসি অমিত মাসান্তকে ফোন করে ঘটনার কথা নিজেই জানায় গৌতম। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভেতর থেকে খিল দেওয়া ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করে স্ত্রী মমতা মাহাত (৩৫), ছেলে দেবজিত (৬) ও কন্যা প্রিয়া মাহাত (৩)–এর রক্তাক্ত মৃতদেহ। পাশের বিছানা থেকেই সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় গৌতমকে। চিকিৎসকেরা জানান, সে বিষ খেয়েছিল।
মৃত বধূর বাবা, পুরুলিয়া মফস্বল থানার চাকড়া এলাকার বাসিন্দা নেপাল মাহাত, জামাইয়ের বিরুদ্ধে কাশিপুর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পরে গৌতমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরা চলাকালেই সে খুনের কথা স্বীকার করে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় রক্তমাখা কুড়ুল। পুলিশ জানতে পারে স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করত গৌতম। অশান্তি হতো দম্পতির মধ্যে। আর তার থেকেই স্ত্রী সন্তানদের খুন করে আত্মহননের চেষ্টা করে সে।
তদন্তকারী অফিসার কল্যাণ সখা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চার্জশিট জমা দেন। ২০২৩ সালের ১৭ নভেম্বর চার্জ গঠিত হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর। এই মামলায় ১৫ জন সাক্ষ্য দেন।
সবশেষে, আদালত সমস্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ বিচার করে দোষী গৌতম মাহাতকে সর্বোচ্চ সাজা—মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে।
Post Comment