নিজস্ব প্রতিনিধি, পাড়া:
কালীপুজোর আলোর রাত বদলে গেল আঁধারে! সোমবার প্রায় রাত ৯ টা নাগাদ পুরুলিয়ার পাড়া থানার চাপুড়ি গ্রামে ‘ডাইনি’ অপবাদে মুখ থেঁতলে
এক আদিবাসী বধূকে নৃশংসভাবে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় তার দেওর সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
নিহতের নাম পদবী টুডু (৩৭)।
তার বাড়ি ওই চাপুড়ি গ্রামেই।
এই ঘটনায় খুনের মামলা রুজু হওয়ায় দেওর সহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পাড়া থানার পুলিশ। ঘটনার পর এক মহিলা রক্তমাখা লোহার রড নিয়ে এসে আনাড়া ফাঁড়িতে আত্মসমর্পণ করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে পদবীকে ‘ডাইনি’ বলে মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হত। পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি ও বিরোধের জেরে সোমবার রাতে এই প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে পারিবারিক অশান্তি থেকে বচসা। তারপর শুরু হয় মারধর। অভিযোগ, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয় পদবী টুডুর উপর। ফলে তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলেই মারা যান। পাড়া থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনার পর নিহতের পরিবারের একাধিক সদস্যকে আটক করা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর ২ মহিলা সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে পাড়া থানার পুলিশ। ধৃতদেরকে মঙ্গলবার
রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হয়। নিহতের স্বামী সুভাষ টুডু জানান, “বছরের পর বছর পদবীকে ‘ডাইনি’ অপবাদ সহ্য করতে হয়েছিল। সোমবার রাতে সংসারে ঝগড়া বাঁধতেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্মমভাবে তাকে হত্যা করে।” নিহতের মেয়ে ঊষারানী টুডু অভিযোগ করেন, “অনেক দিন ধরে মা মানসিক নির্যাতনের শিকার ছিলেন। সোমবার রাতে আমি নিজের চোখে দেখেছি কিভাবে মাকে হত্যা করা হয়।
দোষীদের কঠিন শাস্তি চাই। “
স্থানীয় বিজ্ঞান মনস্ক সংগঠনও এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ-র পুরুলিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক তথা চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন,
” এই কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আমাদের ধারাবাহিক প্রচার চলছে। কিন্তু তারপরও এই ঘটনা ঘটেই চলেছে। দোষীদের কে এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে আর কোথাও এমন ঘটনা না ঘটে।”










Post Comment