insta logo
Loading ...
×

দেশজ সংস্কৃতি রক্ষায় তৎপর মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি মানভূম কালচারাল অ্যাকাডেমি

দেশজ সংস্কৃতি রক্ষায় তৎপর মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি মানভূম কালচারাল অ্যাকাডেমি

নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া :

ঢোল-মাদলের তালে, কুড়মালি গানের সুরে, মাথায় রঙিন ফুল সাজানো তরুণীরা ঘিরে ধরেছিল করম গাছকে। কৃষিজীবী মানুষদের প্রাণের উৎসব, করম পরব, যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পেল মানভূম কালচারাল আকাদেমির আয়োজনে। রবীন্দ্রভবনের প্রাঙ্গণ সাজসজ্জায় মুখরিত। শুক্রবার সেখানে বসেছিল করম পরবের আসর।

পুরুলিয়া জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হংসেশ্বর মাহাতো বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে দেওয়া মানভূম কালচারাল আকাদেমির পক্ষ থেকে এই করম পরব উদযাপন করা হয়। সহায়তা করেছে পুরুলিয়া জেলা তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর। করম পরব আসলে এই জঙ্গলমহল, ঝাড়খণ্ড, মানভূমের কৃষিজীবী মানুষের প্রাণের প্রতীক। কৃষি সভ্যতার নানা নিদর্শন এই পরবের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়। আজকের বিশ্বায়নের যুগে এই সংস্কৃতি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। তাই সরকারিভাবে এই উৎসব আয়োজন করা হয়েছে, যাতে খেটে খাওয়া মানুষের এই ঐতিহ্য অটুট থাকে।”

করম পরব যে শুধু আনন্দের নয়, এর পেছনে কৃষি সভ্যতার জন্মকথা লুকিয়ে আছে সেই কাহিনি ব্যক্ত করলেন শিল্পী শক্তিপদ মাহাতো। তিনি বলেন, “এই পরবের দুই দেবতা—করম রাজা আর করম রানি। একসময় মেয়েরা নদীর ধারে বালির মধ্যে দানা-শস্য বপন করতো, খেলা করতে করতে অঙ্কুরোদগম দেখতো। সেখান থেকেই কৃষিকাজের শুরু। করম বলে এক বিশেষ গাছ আছে, সেই গাছকে কেন্দ্র করে মেয়েরা চক্রাকারে নাচ করে। তাদের গান গাওয়া হয় কুড়মালি ভাষায়।”
নৃত্যশিল্পী লক্ষ্মী মাহাতো বলেন, “আজকের অনুষ্ঠানে দশটা নাচের দল অংশগ্রহণ করেছিল। নৃত্যশিল্পীরা মাথায় যে ফুল পরে নৃত্য পরিবেশন করেন, সেগুলো সব তারা নিজের হাতে তৈরি করেন।”

গল্পের মতো করে এগিয়েছে অনুষ্ঠান। তাদের সুরে, তাদের নাচে, তাদের বিশ্বাসে ধরা দিয়েছে কৃষি সভ্যতার সেই চিরন্তন উত্তরাধিকার। মনে হচ্ছিল, এ কেবল এক উৎসব নয়, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে চলা জীবনসংস্কৃতির অমলিন ধারা।

Post Comment