নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া :
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ রাজ্যের কাছে অবিলম্বে মর্নিং স্কুল করার অনুমতি চাইলো। অন্যদিকে রাজ্য শিক্ষা দফতর বন্যা পরিস্থিতির জন্য তৈরি রাখতে বলল স্কুলগুলোকে।
পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি রাজীবলোচন সোরেন বলেন,
“মর্নিং স্কুলের জন্য আবার পুনরায় অনুরোধ করা হয়েছে l”
চড়চড়িয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। সঙ্গে চরম অস্বস্তিকর আর্দ্রতা। ভ্যাপসা গরমে পড়ুয়ার সঙ্গে অসুস্থ শিক্ষককও। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে মানবাজার থানার গোপালনগর নিউ প্রাইমারি স্কুলে। বুধবার স্কুল খুলতেই কিছুক্ষণের মধ্যে আচমকা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন বিদ্যালয়ের পার্শ্বশিক্ষক পল্টু কর্মকার। তাঁকে নিয়ে আসা হয় মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নেপাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ” চেয়ারে বসেছিলেন উনি। সেই অবস্থাতেই জ্ঞান হারান।
অন্যদিকে কোটশিলা থানার জিউদারু জুনিয়ার বেসিক স্কুলে প্রচণ্ড গরমের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্র। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমীর বাউরি বলেন, “তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আজমত আলি আনসারি গরমের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বমি করতে থাকে সে। আমরা প্রাথমিক শুশ্রূষা করি। পরে সে সুস্থ বোধ করে।”
বাংলার পশ্চিমতম এই জেলায় গ্রীষ্মের প্রকোপ বিগত কয়েকদিন ধরেই অনুভূত হচ্ছিল। গতকাল জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।আজ বুধবার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে গতকালের চেয়েও আজ আর্দ্রতা ছিলো উচ্চমাত্রার। ফলে অনুভূত তাপমাত্রা ছিল প্রায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এমন গরমে ছোট ছোট শিশুদের স্কুলে দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা মারাত্মক ঝুঁকির হতে পারে। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রাজীব লোচন সরেন রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে আবেদন জানিয়েছেন এই অসহনীয় তাপপ্রবাহের কারণে অবিলম্বে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে মর্নিং সেশনে পঠন পাঠন চালানোর অনুমতি দেওয়া হোক।
অন্যদিকে আজই রাজ্যে স্কুল শিক্ষা দফতর প্রতিটি জেলার ডিআই-দের নির্দেশ দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতির জন্য আশ্রয়স্থল হিসেবে স্কুল বিল্ডিংগুলি প্রস্তুত রাখা হোক। সাথে তাপপ্রবাহ নিয়ে স্কুল শিক্ষা দফতর সতর্ক করেছে যাতে দুপুরে ছাত্রছাত্রীদের শারীরিক কসরত ও খেলাধুলো থেকে বিরত রাখা হয়।
এই পরিস্থিতিতে অনেক অভিভাবকই শিশুদের স্কুলে পাঠানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
এমনিতেই এপ্রিল, মে, জুন এই তিন মাস পুরুলিয়া জেলায় মর্নিং স্কুলের ট্র্যাডিশন ছিলো। এবছরই নজিরবিহীন ভাবে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের নির্দেশকে প্রত্যাহার করতে বাধ্য করে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
Post Comment