insta logo
Loading ...
×

ডে না মর্নিং? জেলা প্রাথমিক যেন সার্কাস!

ডে না মর্নিং? জেলা প্রাথমিক যেন সার্কাস!

নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া :

একমাস গ্রীষ্মের ছুটি কাটিয়ে সোমবার খুলেছে স্কুল। আর খুলতেই দুদিনের মধ্যে তিনটি বিজ্ঞপ্তি ঘিরে স্কুল যেন সার্কাসের ময়দান। অনেকটা মিউজিক্যাল চেয়ার হয়ে উঠেছে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি।

ঘটনার সূত্রপাত ২রা জুন সোমবার জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি খোলার দিন। ছুটির আগের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ডে সেশনে চালু হয় পঠন পাঠন। কিন্তু অত্যধিক গরম চলছে দেখে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রাজীব লোচন সরেন বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলেন, ৩রা জুন থেকে ২০ জুন মর্নিং সেশনে চলবে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি। পরদিন মর্নিং স্কুল শুরু হয়ে যায়। রাজ্য প্রাথমিক পর্ষদ বিষয়টিতে ব্যাপক উষ্মা প্রকাশ করে। জারি করে বিজ্ঞপ্তি। বলে দেয়, অনেক ডিপিএসসি তাদের না জানিয়ে বিদ্যালয়ের পঠন পাঠনের সময় বদলানো যাবে না। অগত্যা সেদিনই পূর্বের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। জানিয়ে দেওয়া হয় ৫ই জুন থেকে ডে সেশনে চলবে বিদ্যালয়।

জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান রাজীবলোচন সরেন বলেন, ” জ্যৈষ্ঠ মাসে পুরুলিয়ায় ভীষণ গরম রয়েছে। তাই খুদে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে মর্নিং সেশনে বিদ্যালয় চালানোর কথা বলেছিলাম। কিন্তু রাজ্য পর্ষদ চেয়েছে সারা রাজ্যে একই রকম স্কুল টাইমিং হোক। তাই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করেছি। “

“শিক্ষকদের সমাজের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করতে চাইছে এই সরকার,” এমন মন্তব্য করে উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সহ সভাপতি চন্দন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ” এই প্রথম গরমের ছুটির পর কবে স্কুল খুলবে জানত না পড়ুয়ারা। সোমবার বিদ্যালয়ে গিয়ে তাদের ডেকে ডেকে ডে সেশনে পড়াশোনা শুরু হয়। সেদিন বিকেলে হোয়াটসঅ্যাপে নোটিশ আসে, মঙ্গলবার থেকে মর্নিং সেশনে চলবে বিদ্যালয়। কী ভাবে জানাব শিশুদের? হোয়াটসঅ্যাপ কতজন ব্যবহার করে? ফলে ফের পরদিন স্কুলে গিয়ে তাদের ডেকে ডেকে মর্নিং স্কুল শুরু হয়। মঙ্গলবার রাতে ফের বিজ্ঞপ্তি, বৃহস্পতিবার থেকে ডে সেশনে চলবে বিদ্যালয়। অভিভাবকদের কাছে তো আমরা শিক্ষকেরা হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি। তাঁরা আমাদের বলছেন, এ কি স্কুল না সার্কাস? আসলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলির ক্ষমতা পুরোপুরি অগণতান্ত্রিক ভাবে খর্ব করছে এই সরকার। পশ্চিমবঙ্গ বিশাল রাজ্য। সর্বত্র কি একইরকম গরম পড়ে? এসি ঘরে বসে কর্তারা তা বুঝছেন না, না বুঝতে চাইছেন না? তারা আসলে এমন মিউজিক্যাল চেয়ার বানিয়ে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাটাকেই ধ্বংস করতে চাইছেন। শিক্ষা না থাকলে প্রশ্ন করবে না কেউ। হয়ে থাকবে বশংবদ। হাস্যকর পরিস্থিতি ইচ্ছে করে তৈরি করছে সরকার। “

Post Comment