নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া:
টানা দুই বছর টার্গেট পূরণ না হলেও, অবশেষে এবছর পুরুলিয়া জেলায় আমন ধানের চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। চলতি খরিফ মরশুমে কৃষি দপ্তর টার্গেট বেঁধেছিল ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে। বাস্তবে বোনা হয়েছে ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রারও বেশি।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালে যখন বৃষ্টিপাত হয়েছিল ১,৩০৮.৬ মিলিমিটার, তখন টার্গেট ছিল ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার হেক্টর, কিন্তু চাষ হয়েছে মাত্র ২ লক্ষ হেক্টরে। সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল বাংলা শস্য বীমা প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৯৬.৪০ কোটি টাকা। উপকৃত হয়েছিলেন ১ লক্ষ ২০ হাজারেরও বেশি কৃষক। ২০২৪ সালে টার্গেট ছিল ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার হেক্টর, চাষ হয়েছে ৩ লক্ষ ২৮ হাজার হেক্টরে। অথচ তখন বৃষ্টিপাত হয়েছিল স্বাভাবিকের থেকেও বেশি— ১,৫৮৬.২৫ মিলিমিটার।
কৃষি দপ্তরের আধিকারিকদের ব্যাখ্যা, গত দু’বছরের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই এবছর কৌশল পাল্টানো হয়েছে। প্রদর্শনী ক্ষেত্র গড়ে চাষিদের হাতে বীজ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জেলার ২০টি ব্লকে ১৩ হাজারেরও বেশি হেক্টরে আলাদা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। শুধু আমন নয়, অন্যান্য শস্যের ক্ষেত্রেও লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লক্ষ ৩২ হাজার হেক্টর।
পুরুলিয়ার কৃষি প্রায় পুরোপুরিই বৃষ্টিনির্ভর। তবে চেক ড্যাম ও ছোট-বড় জলাশয়ের সংখ্যা বাড়ায় সেচের অবস্থা কিছুটা হলেও বদলেছে। জেলার সারা বছরের গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১,৩২১.৯ মিলিমিটার। সেখানে চলতি বছর ১ জুন থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ১,২৫৮ মিলিমিটার।
তবে শ্রাবণের শেষদিনে বৃষ্টির গ্রাফ নিম্নমুখী। ১৭ অগস্টের পরিসংখ্যান বলছে, জেলাজুড়ে গড় বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৩.০২ মিলিমিটার। বাঘমুন্ডি (১৪.২ মিমি) ও মানবাজার (৯ মিমি) ছাড়া প্রায় সব এলাকায় বৃষ্টি প্রায় নগণ্য। অনেক জায়গায় একেবারেই শূন্য। এদিন জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ২৪.৫ ডিগ্রি।
( তথ্য ও সূত্র: পুরুলিয়া কৃষি দপ্তর )
Post Comment