সুইটি চন্দ্র ও সূর্য দত্ত, পুরুলিয়া
প্রথম বর্ষে পদার্পণ করল পুরুলিয়ার নবগঠিত সংগীত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘টি ফার্স্ট বিট একাডেমি’। এই একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন একাধিক নবীন ও প্রবীণ শিল্পী। অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যেমন নতুন প্রজন্মের গানের প্রতি আগ্রহ স্পষ্ট হয়েছে। তেমনি ফুটে উঠেছে শিল্পীদের অনুভব ও স্বপ্ন। একাডেমির কর্ণধার অর্ঘ্যদীপ সিনহা জানান, “এটাই আমাদের প্রথম বছর। আমরা চেষ্টা করছি পরের বছর থেকে আরো বড় পরিসরে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করার। সকলের সহযোগিতা পেলে আগামী দিনে একে আরও সফল করে তোলা সম্ভব। পড়াশোনার মতো সংগীতকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “পুরুলিয়া জেলা গানের ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে। কলকাতার তুলনায় আমাদের এখানে পরিকাঠামো ও সুযোগ অনেক কম। কিন্তু এখানকার প্রতিভাবান শিল্পীরা চাইলে গানকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। আমাদের গানকে প্রাধান্য দিয়ে, একে মানসিক শান্তির উৎস হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।”

অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শ্রুতি কবিরাজ নামের এক তরুণী শিল্পী বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই গান শিখছি। শুরুটা হয় ঠাকুমার কাছে, এরপর বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষণ নিই। গত বছর এই একাডেমিতে যোগ দিয়েছি। এখানে এসে আমার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। আমরা চেষ্টা করছি আমাদের সেরাটা দেওয়ার জন্য।”
তিনি আরও বলেন, “গান এমন একটি বিষয়, যা ছাড়া জীবন কল্পনা করা যায় না। নাচের ক্ষেত্রেও গান দরকার হয়। এমনকি মানসিক অবসাদ বা অসুস্থতা থেকেও আমরা গান শুনে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠতে পারি। তাই আমি চাই গানকে পেশা হিসেবে নিয়ে আগামীর পথ চলতে।”
এই অনুষ্ঠানে শোনা গেল ক্লাসিক্যাল, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি-সহ নানা ঘরানার গান। এক শিল্পীর কথায়, “আমি ক্লাসিক্যাল গানে বেশি স্বচ্ছন্দ, তবে বিভিন্ন ধরণের গানেই নিজেকে উপস্থাপন করতে ভালোবাসি।” অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট যে, পুরুলিয়ায় গান শুধু বিনোদনের উপকরণ নয়, বরং এক শক্তিশালী আত্মিক অনুশীলন। শ্রেয়া ঘোষাল, অরিজিৎ সিং-এর মতো জনপ্রিয় শিল্পীদের গানকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে এগিয়ে চলছেন এখানকার নবীন শিল্পীরা। একাডেমির এই প্রয়াস নিঃসন্দেহে আগামী দিনে পুরুলিয়ার সাংস্কৃতিক জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
Post Comment