নিজস্ব প্রতিনিধি, বান্দোয়ান :
অযোধ্যার পর কি এবার বান্দোয়ান? এক সময় বারুদের গন্ধমাখা অযোধ্যা যেভাবে আজ হয়ে উঠেছে পর্যটকদের সপ্তাহন্তিক ঠিকানা, সেভাবে বান্দোয়ানও কি সেজে উঠবে পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে?
এই প্রশ্নই উঠে এল শুক্রবার বান্দোয়ানে আয়োজিত একটি জনমুখী অনুষ্ঠানে। জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত মানুষের হাতে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে ওই দিন বান্দোয়ান বাজারের একটি ম্যারেজ হলে স্বাস্থ্য ও চক্ষু পরীক্ষা শিবিরের আয়োজন করে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। বান্দোয়ান, বোরো, বরাবাজার এবং মানবাজার এলাকার বহু মানুষ এই শিবিরে এসে স্বাস্থ্য পরিষেবা গ্রহণ করেন। পাশাপাশি জেলার পুলিশ প্রশাসন ও এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার যৌথ উদ্যোগে দুস্থদের মধ্যে হুইলচেয়ার, প্রবীণদের হাঁটার লাঠি, পড়ুয়াদের স্কুল ব্যাগ এবং খেলোয়াড়দের হাতে ফুটবলও তুলে দেওয়া হয়।

সকাল থেকেই শুরু হয় চোখ পরীক্ষা। যাঁদের প্রয়োজন, তাঁদের হাতে বিনামূল্যে চশমা তুলে দেওয়া হয়। সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে দেওয়া হয় প্রয়োজনীয় ওষুধও।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সরেন, এসডিপিও (মানবাজার) বরুণ বৈদ্য এবং মানবাজার মহকুমার অন্তর্গত ছ’টি থানার পুলিশ আধিকারিকরা। অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার চিকিৎসকদের সংবর্ধনা জানান। কথা বলেন চিকিৎসা নিতে আসা মানুষজনের সঙ্গে। চোখের পরীক্ষা ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন কি না—সেটাও নিজে দাঁড়িয়ে খতিয়ে দেখেন।

সেই প্রসঙ্গেই উঠে আসে বান্দোয়ানের বদলে যাওয়ার ছবি। এক সময়ের অশান্ত বান্দোয়ান আজ শান্ত, উন্নয়নেও এসেছে গতি—এমনটাই বলছেন বক্তারা। তাঁদের কথায়, ‘‘বান্দোয়ান জুড়ে অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে। আলাদা সার্কিট গড়ে একে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। যেভাবে অযোধ্যা পাহাড় পর্যটনের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে, বান্দোয়ানও একদিন সেই জায়গা নিতে পারবে।’’
পুলিশ ও প্রশাসনের এই মানবিক মুখ এবং সম্ভাবনার বার্তা—দুই মেলেই শুক্রবারের বান্দোয়ান হয়ে উঠল আরও কিছুটা আলোকোজ্জ্বল।











Post Comment