insta logo
Loading ...
×

ছ মাসে স্কুলের এ কী দশা! মাথায় হাত সবার!

ছ মাসে স্কুলের এ কী দশা! মাথায় হাত সবার!

নিজস্ব প্রতিনিধি , আড়শা:

মাত্র ছয় মাস। আর তাতেই ভোলবদল। নিজস্ব তহবিল থেকে সেজে উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। কমেছে স্কুল ছুটের সংখ্যা। ছবিটা আড়শা ব্লকের জারাট্যাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। প্রধান শিক্ষকের আবেদনে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসেছেন গ্রামের বাসিন্দারাও।

আড়শা ২নং চক্রের জারাট্যাড় প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ছবির মতো সাজিয়ে তুলেছেন শিক্ষকরা । দেওয়ালে দেওয়ালে রবি ঠাকুরের সহজ পাঠের ছবি। আঁকা হয়েছে জেলার ঐতিহ্যমণ্ডিত লোকসংস্কৃতির ছবিও। আছে বিভিন্ন মনীষীর ছবি। ছোটোরা যাতে বুঝতে পারে তার জন্য ফুল ও ফলের ছবি রয়েছে দেওয়ালে। আছে সেফ ড্রাইভ,সেভ লাইফের বার্তা সহ নানা সচেতনতার বার্তা। খাবার আগে কী ভাবে হাত ধুতে হয়, তারও ছবি তুলে ধরা হয়েছে দেওয়ালে।

স্কুলে রয়েছে “শিশু সংসদ “। তারাই স্কুলকে ভালোভাবে চালানোর ভূমিকা পালন করে। প্রতি শনিবার হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিদ্যালয়টি এখন আর শুধু পাঠ্যক্রমে সীমাবদ্ধ নয়, ছবি আঁকা,গান ,ছড়া , আবৃত্তি শেখানোর পাশাপাশি দেওয়া হয় ব্যায়াম চর্চা ও স্বাস্থ্য বিধির পাঠ। পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্যের আলাদা আলোর ডাস্টবিনে ভাগ করে আবর্জনা ফেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে স্কুলেই।

এই পরিবর্তনের কাণ্ডারি গ্রামের বাসিন্দা তথা শিক্ষক ভূখল চন্দ্র মাহাত। এলাকার প্রত্যেকের কাছে তিনি ” ভূখল মাষ্টার” নামে পরিচিত। ছ’মাস আগে এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হয়ে এসেছেন। তারপর থেকেই বিদ্যালয়ের আমূল পরিবর্তন হয়েছে বলে গ্রামবাসীরা জানান। বেড়েছে স্কুলে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা। জারাট্যাড় গ্রাম ছাড়াও পাশের গ্রামের ছাত্র ছাত্রীরা ভর্তি হয়েছে। স্কুলকে নবরূপে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে স্কুলের ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ১৫৫ জন।

স্কুলের পথচলা শুরু ১৯৭৩ সালে। শিক্ষক রয়েছেন দুজন। প্রধান শিক্ষক ভূখল চন্দ্র মাহাত জানান,”ছাত্রছাত্রীদের কাছে মুখে বলার চেয়ে, ছবি এঁকে বোঝানো অনেক সহজ। সেই কারণেই স্কুলকে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে।”
স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী পরি মাহাত,পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী চৈতালি মাহাত বলেছে, “স্কুলে এলে আর মনে হয় না বাড়ি যাবো। মনে হয় সারাদিন এখানে বসেই লেখাপড়া করি।”

গ্রামের বাসিন্দা দুর্গাপদ মাহাত, স্বপন মাহাত জানান, ” গ্রামের সমস্ত ছাত্রছাত্রী এখন স্কুলে যায়। গ্রামের ছেলে ভূখল চন্দ্র মাহাত স্কুলে প্রধান শিক্ষক পদে আসার পরেই স্কুলের পরিবেশটাই পাল্টে গেছে।”

প্রধান শিক্ষক ভূখল চন্দ্র মাহাতোর কাজের প্রশংসা করেছেন আড়শা ২নং চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শান্তনু পোড়িয়া । তিনি জানান, ” আড়শা ২নং চক্রে বেশ কয়েকটি স্কুল রয়েছে বেশ সাজানো গোছানো। সেগুলো পেয়েছে শিশু মিত্র, যামিনী রায়- এর মতো পুরস্কারও। কম সময়ের মধ্যে স্কুলের শিক্ষকরা যে ভাবে স্কুলকে সাজিয়ে তুলেছেন তা, প্রশংসার যোগ্য।”

Post Comment