insta logo
Loading ...
×

চূড়ান্ত কুড়মি সমাজের প্রতিবাদ সভার স্থান, কোথায় হচ্ছে সভা?

চূড়ান্ত কুড়মি সমাজের প্রতিবাদ সভার স্থান, কোথায় হচ্ছে সভা?

নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া :

অবশেষে চূড়ান্ত হলো আদিবাসী কুড়মি সমাজের বহুল প্রতীক্ষিত প্রতিবাদ সভার স্থান। পুলিশ প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে পুরুলিয়া শহরের মধ্যে সভা করার পরিকল্পনা ব্যর্থ হলেও, সমাজের নেতারা শহরের বাইরে পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের টামনা থানার অন্তর্গত প্রস্তাবিত নতুন বাসস্ট্যান্ডে সভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ৮ অক্টোবর, দুপুর একটা থেকে সেখানে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেদিনই বেলগুমা পুলিশ লাইনে স্মারকলিপি গ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে।
প্রথমে কুড়মি সমাজ পুরুলিয়া শহরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে সভা করতে চাইলেও, জেলা পুলিশ অনুমোদন দেয়নি। পুলিশের দাবি, শহরের ভেতরে বিশাল জমায়েত হলে যানবাহন চলাচল এবং আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা তৈরি হতে পারে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে হিলভিউ গ্রাউন্ড, রাসমেলা ময়দান ও এমএসএ গ্রাউন্ডেও সভা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিকল্প হিসেবে পুলিশ প্রস্তাব দেয় শিমুলিয়া, ডুঁড়কু বা হুলহুলিটাড়ে সভা করার। তবে শেষমেষ সমাজের পক্ষ থেকে শহরসংলগ্ন নতুন বাসস্ট্যান্ড চূড়ান্ত করা হয়। প্রস্তাবিত এই স্থানে পুলিশও আপত্তি জানায়নি।

উল্লেখ্য, ২০ সেপ্টেম্বর কোটশিলা স্টেশনে আদিবাসী কুড়মি সমাজের “রেল টেকা” কর্মসূচির সময় পুলিশ ও কুড়মি সমাজের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। উভয় পক্ষেরই একাধিক ব্যক্তি আহত হন। পরে পুলিশ বহুজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। কুড়মি সমাজের অভিযোগ অতি সক্রিয়তা দেখিয়েছে পুলিশ। এরিয়া ডমিনেশনের নামে পুলিশ চালিয়েছে অত্যাচার। অন্যদিকে পুলিশের বক্তব্য, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে কোটশিলা সংলগ্ন জিউদারু ও চয়াডি গ্রামে ঘটনার পর আসতে চেয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী সুদেশ মাহাতো। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার তাগিদে তাকে আটকে দিয়েছিল পুলিশ।

রবিবার বিকেলে আজসু সুপ্রিমো জিউদারু ও চয়াডি গ্রাম পরিদর্শনে যান। তিনি গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন গিরিডির সাংসদ চন্দ্রপ্রকাশ চৌধুরী, পুরুলিয়ার আজসু সভাপতি ও আইনজীবী অতুল চন্দ্র মাহাতো-সহ দলের অন্যান্য নেতৃত্ব। তাঁর সফর ঘিরে কোটশিলা এলাকায় ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা।
ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী ও আজসু সুপ্রিমো সুদেশ মাহাতো বলেন,
“এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া জরুরি। পুলিশ যদি নিজেই তদন্ত করে, তাহলে নিরপেক্ষতা বজায় থাকবে না।”

প্রসঙ্গত, পুনরায় আদিবাসী তালিকা ভুক্তির দাবিতে ২০ সেপ্টেম্বরের রেল ও সড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ। কলকাতা হাইকোর্ট সেই কর্মসূচিকে অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করে এবং পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশে অবরোধ ব্যর্থ হলেও, এরপর থেকেই কুড়মি সমাজ পুলিশের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছে। প্রতিবাদে আগামী ৮ অক্টোবর নতুন বাসস্ট্যান্ডে কুড়মি সমাজের সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। প্রশাসন ইতিমধ্যেই নজরদারি ও নিরাপত্তা জোরদার করেছে এলাকাজুড়ে।

Post Comment