insta logo
Loading ...
×

চড়িদায় নজরকাঠি মুখোশের জাদু, বর্ষায় পর্যটনের নতুন আকর্ষণ

চড়িদায় নজরকাঠি মুখোশের জাদু, বর্ষায় পর্যটনের নতুন আকর্ষণ

সুইটি চন্দ্র, চড়িদা(বাঘ মুন্ডি):

পুরুলিয়ার ছৌ মুখোশের গ্রাম চড়িদায় বর্ষার মরশুমে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে উঠে এসেছে এক অভিনব হস্তশিল্প। যার পোষাকি নাম
নজরকাঠি মুখোশ। বৃষ্টি ভেজা অযোধ্যা পাহাড়ে ঘুরতে এসে পর্যটকরা এখন ভিড় জমাচ্ছেন চড়িদার দোকানগুলিতে। কারণ, এখানে মিলছে গোঁফওয়ালা পুরুষ ও নাকছাবি পরা মহিলার জোড়া মুখোশ। যা শুধু ঘর সাজাতে নয়। ‘বুরি নজর’ থেকে রক্ষা করার প্রতীক হিসেবেও ব্যবহার হচ্ছে।

মাত্র ১০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ৫০০ টাকার মধ্যে এই মুখোশের বিভিন্ন রকমের সাজসজ্জা পাওয়া যাচ্ছে। কালো রঙের প্রাধান্যে তৈরি হলেও তাতে সোনালি, সবুজ ও গেরুয়া রঙের ঝলক মুখোশকে করে তুলেছে আরও আকর্ষণীয়। আগে ঘরের দরজায় ঝোলানো হতো লেবু-লঙ্কা।
এখন সেই জায়গা দখল করে নিচ্ছে নজরকাঠি মুখোশ। এমনই দাবি মুখোশ গ্রামের হস্তশিল্পীদের।

এই মুখোশ তৈরির ভাবনা এসেছিল প্রবীণ শিল্পী ফাল্গুনী সূত্রধরের মাথায়। তিনিই প্রথম এই ধরনের মুখোশ তৈরি করেন। এখন তাঁর দেখানো পথেই গ্রামজুড়ে তৈরি হচ্ছে নজরকাঠি মুখোশ। ফাল্গুনীবাবু বলেন, “প্রতিটি পর্যটন মরশুমে আমরা কিছু না কিছু নতুনত্ব আনার চেষ্টা করি। এই নজরকাঠি মুখোশ এই বর্ষায় পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ হয়ে উঠেছে।
আরেক হস্তশিল্পী ললিত সূত্রধর জানান, “এই মুখোশের চাহিদা এখন এতটাই বেড়েছে যে পর্যটকরা অন্য যেকোনো মুখোশের সঙ্গে একজোড়া নজরকাঠি মুখোশ অবশ্যই কিনছেন।”

চড়িদার মুখোশ শিল্প বহুদিন ধরেই ‘বিশ্ব বাংলা’ প্রকল্পের হাত ধরে দেশ-বিদেশে পরিচিতি পেয়েছে। অনলাইন
ব্যবস্থাপনায় এই মুখোশ দিয়ে সাজছে বহু গৃহের অন্দর। দুর্গা, মহিষাসুর, আদিবাসী দম্পতি, কৃষ্ণ থেকে শুরু করে কথাকলি বা করোনাকালের ‘মাস্ক মুখোশ’-এরপর নজরকাঠি মুখোশ সেই তালিকায় যুক্ত হয়ে বাণিজ্যিকভাবে দারুণ সাফল্য পেয়েছে।
কলকাতা থেকে বেড়াতে আসা শুভ্রা চক্রবর্তী বলেন, “অযোধ্যা পাহাড় যেমন মন ভরিয়েছে, তেমনই চড়িদার শিল্পও মন কেড়েছে। নজরকাঠি মুখোশ দেখে মুগ্ধ হয়ে একজোড়া কিনেছি, ঘরের দরজায় ঝোলাব বলে।”
চড়িদার হস্তশিল্পীরা যে সৃজনশীলতার সঙ্গে সংস্কৃতিকে মেলাচ্ছেন, নজরকাঠি মুখোশ তারই এক প্রমাণ। এ যেন বুরি নজরের বদলে শিল্পের উজ্জ্বল নজর।

Post Comment