insta logo
Loading ...
×

গান শুনুন, নাচুন, কিন্তু ডিজে নয়, গ্রাম ঘুরে ঘুরে বার্তা পঞ্চায়েত কর্মী মধুসূদনের

গান শুনুন, নাচুন, কিন্তু ডিজে নয়, গ্রাম ঘুরে ঘুরে বার্তা পঞ্চায়েত কর্মী মধুসূদনের

দেবীলাল মাহাত, পুরুলিয়া:

আনন্দের জন্য গান শুনুন, নাচুন। তবে ডিজে সাউন্ড নয়। এতে অন্যের কষ্ট হয়। ক্ষতি হয়। সাইকেলে ব্যানার নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে এভাবেই ডিজে সাউন্ড বক্স বাজানোর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছেন ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির জেলা সম্পাদক মধুসূদন মাহাত। পুরুলিয়া ১নং ব্লকের কাটাবেড়া গ্রামের বাসিন্দা তথা অস্থায়ী পঞ্চায়েত কর্মী মধুসূদন মাহাতো সময় পেলেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন এক গ্রাম থেকে আর এক গ্রাম। বার্তা একটাই মানুষকে সচেতন করে ,শব্দ দৈত্যের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা ।

তবে এই প্রথম বার নয়। এর আগেও সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে পথে নেমেছিলেন মধুসূদন মাহাত। ২০২৩ সালে জানুয়ারি মাসে ডিজে সাউন্ড বক্সের দাপাদাপি বন্ধ করতে চিঠি লিখেছিলেন স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনকেও চিঠি লিখে হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেছিলেন তিনি। তারপরেই ডিজে সাউন্ড বক্সের বিরুদ্ধে ধড়পাকড় শুরু করেছিল জেলা পুলিশ। একাধিক থানা ডিজে সাউন্ড বক্স বাজেয়াপ্ত করে। স্বস্তির নিঃশ্বাস পেয়েছিলেন সাধারণ মানুষ।
তবে মধুসূদন মাহাত জানান, “এতদিন ধরে ডিজে সাউন্ড বক্সের দৌরাত্ম্য কমে গিয়েছিল। সম্প্রতি শ্রাবন মাস পড়তেই বিভিন্ন জায়গায় আবার ডিজের দৌরাত্ম্য ফিরে এসেছে। তাই আবার ডিজে সাউন্ড বক্সের দৌরাত্ম্য কমাতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছি।” তিনি জানান, “১লা আগষ্ট থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মতো জেলার পুরুলিয়া ১নম্বর ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে চলছে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ মেগা প্রকল্প। পঞ্চায়েত কর্মী হওয়ার সুবাদে সেই ক্যাম্প গুলোতে উপস্থিত থাকতে হয় । তাই ক্যাম্প শুরু-র আগেই ক্যাম্পে আসা মানুষের ডিজে সাউন্ড বক্স বাজানোর কুফল বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি। কারন ক্যাম্প গুলোতে এক সাথে অনেক মানুষকে পাওয়া যাচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, “যে কোনো উৎসব হোক বা পারিবারিক অনুষ্ঠানে দেখছি ডিজে সাউন্ড বক্স বাজানো রীতি হয়ে পড়েছে। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের স্বার্থে, ডিজে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে চলছে। এই শব্দদূষণ সকলের ক্ষতি হয়। পুরোপুরি ভাবে ডিজে-র আওয়াজ বন্ধ করা দরকার।” কারন এই আওয়াজে বয়স্ক থেকে ছোট বাচ্চাদের সকলের সমস্যা হয়। তাই নিয়ম মেনে সকলকে সাউন্ড বক্স বাজানোর অনুরোধ করছি।

বুধবার ভুল গ্রামে গিয়ে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ ক্যাম্পে গিয়ে প্রচার চালান মধুসূদন মাহাত। সেই গ্রামের বাসিন্দা অসিত বর্মা মধূসুদন মাহাতোর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। তিনি বলেন, ডিজে সাউন্ড বক্স বাজানোর বিরুদ্ধে সকলকেই এই ভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক তথা পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন,
“বিভিন্ন বাধা সত্ত্বেও তিনি পথে নেমে সাধারণ মানুষকে শব্দ দূষন বিষয়ে সচেতন করছেন তা খুবই ভালো দিক। আমরাও তার পাশে আছি। শব্দ দূষনের বিরুদ্ধে সমাজের সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে।”

Post Comment