নিজস্ব প্রতিনিধি, বলরামপুর :
করোনাকালে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে নতুন করে প্রাণ ফিরে পেল বলরামপুরের কেরোয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্তর্বিভাগ পরিষেবা পুনরায় চালু করেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো। উপস্থিত ছিলেন সদর মহকুমাশাসক উৎপলকুমার ঘোষ, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস, প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, বলরামপুরের বিডিও সৌগত চৌধুরি-সহ একাধিক প্রশাসনিক ও জনপ্রতিনিধি।

কেরোয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন থেকে মিলবে ২৪ ঘণ্টার স্বাস্থ্য পরিষেবা। চালু হয়েছে ১০ শয্যার ইনডোর বিভাগ, যা থেকে উপকৃত হবেন এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল লকুইচাটানি, শালুনি, হেদেলবেড়া, ঘাটবেড়া, খেকরিডি, কেরোয়া, কুমারডি, যুগিডি ও কাশিডি গ্রামের মানুষজন। এলাকাবাসী জানান, করোনার আগে পর্যন্তও পরিষেবা চললেও অতিমারির সময় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী সংকটে কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ইনডোর বিভাগ।
বলরামপুর ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. সৌমেন মন্ডল জানান, “এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি মেনেই ফের চালু করা হল এই পরিষেবা। কিছু পরিকাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে, সে বিষয়ে বিডিওকে অবহিত করা হয়েছে।”

তবে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ইতিহাস আরও পুরনো। একসময় এই গোটা অঞ্চল ছিল মাওবাদীদের দখলে। চিকিৎসক আসা তো দূর, আতঙ্কে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দরজাও খুলত না। দিনের আলোতেও এলাকায় সাঁটানো হতো মাওবাদী পোস্টার।
তৎকালীন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর উদ্যোগে ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো ইনডোর পরিষেবা চালু হয়। শান্তিরামবাবু বলেন, “এই এলাকা আমাকে বারবার আশীর্বাদ করেছে। মানুষের চাহিদা পূরণ করাই আমার কর্তব্য। তাই ফের চালু করা গেল এই পরিষেবা।”
কেরোয়ার স্বাস্থ্যকেন্দ্র ঘিরে তাই আজ আবার আশাবাদী গোটা বলরামপুর ও সংলগ্ন গ্রামের মানুষ। চিকিৎসা পরিষেবা ফিরে আসায় স্বস্তি ফিরেছে সাধারণের মুখে। মাও আতঙ্ক আর করোনা-দুঃস্বপ্নকে পেছনে ফেলে এবার নতুন আশার আলো দেখছেন তাঁরা।
Post Comment