insta logo
Loading ...
×

কেন দুর্গাষ্টমীতে জমিকে সাধভক্ষণ করান মানভূমের মানুষ?

কেন দুর্গাষ্টমীতে জমিকে সাধভক্ষণ করান মানভূমের মানুষ?

দেবীলাল মাহাত, আড়শা :

মহাঅষ্টমীর পুণ্য তিথিতে ধানের জমিতে আতপ চালের গুঁড়ি গোলা জলের ছিটে দিয়ে দিনটিকে পালন করলো জঙ্গলমহলের কৃষিজীবী মানুষ। যাকে বলা হয় ‘খেত জাগানো।’ প্রাচীন কাল থেকেই কৃষিজীবী মানুষ দিনটিকে শুভ বলে মনে করেন। সময়ের সাথেসাথে জীবনযাত্রায় বদল ঘটালেও, প্রাচীন রীতি রেওয়াজ আজও রয়েছে।

প্রাচীন কাল থেকেই কৃষিজীবী মানুষ ‘তিথি’ নির্ভর। ‘তিথি’কে কেন্দ্র করেই তাদের আচার আচরণগুলো পালিত হয়। বিশেষ করে তারা অষ্টমী তিথির দিন গুলো শুভ বলে মানতেন। তেমনি মহাঅষ্টমী তিথিতে তারা পালন করেন ‘খেত জাগানো’। ধানকে তারা ‘ধনলক্ষ্মী’ বলে মনে করেন। লোক বিশ্বাস, রহিন ‘পরবে যে ধানের বীজ চারা দেওয়া হয়েছিল , সেই ধানগাছ পরিপুষ্ট হয়ে আজ গর্ভবতী। সেই জন্য খেত জাগানোর মাধ্যমে তারা গর্ভবতী ধানের ( এই সময় ধান ফুটতে শুরু করে ) ‘সাধভক্ষণ’ করান । এদিন তারা প্রতিটি খেতেই চালের গুঁড়ির জল ফেলে ভালো শস্য পাওয়ার আশায় প্রার্থনা করেন। অনেকে জমির আলে আলপনা আঁকেন।
আড়শা ব্লকের চাষি গৌর মাহাত,মধু মাহাত জানান, “আজকে আমরা সমস্ত ধানের জমিতে আতপ চালের গুঁড়ির জলের ছিটে ফেলে ধানদের সাধভক্ষণ করিয়েছি। পূর্ব পুরুষাণুক্রমে ধরে সেই প্রথা চলে আসছে।”

কাশিপুর মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ডঃ ক্ষীরোদ চন্দ্র মাহাত জানান, “কৃষিজীবী মানুষের কাছে দিনটি গুরুত্বপূর্ণ। যেমন ভাবে গর্ভবতী কন্যাদের তারা বিভিন্ন ফল সহ চালের গুঁড়ির পিঠা দিয়ে ‘সাধভক্ষণ’ করিয়ে থাকেন ঠিক তেমনই এদিন ধানের জমি পরিদর্শন করে ভালো ফলনের আশায় জমিতে চালের গুঁড়ির জল ছিটিয়ে ‘সাধভক্ষন ‘করান। “
সিধো কানহো বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ডঃ সনত কুমার মাহাত জানান, “কৃষিজীবী মানুষজন আজও প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে চলেছেন। কৃষির সাথে যাদের প্রাণের যোগ,তারা জমিতে চালের গুঁড়ি ছিটিয়ে দিনটি পালন করে থাকেন।”

Post Comment