নিজস্ব প্রতিনিধি, বরাবাজার:
অন্ধ বিশ্বাসে ওঝার অপেক্ষা, আর তাতেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তে বসেছিলেন শবরপাড়ার গৃহবধূ ঝুনপুকি শবর। শেষ পর্যন্ত প্রাণ বাঁচালো পুলিশ। শনিবার গভীর রাতে সাপে কামড়ানো ওই মহিলাকে হাসপাতালে পৌঁছে দেন বরাবাজার থানার কর্মীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগালবাঁধ শবরপাড়ার বাসিন্দা, বছর ঊনচল্লিশের ঝুনপুকি সেদিন রাতের খাবার খেয়ে মেঝেতে ঘুমিয়েছিলেন। রাত প্রায় একটা নাগাদ হাতে জ্বালা অনুভব করে ঘুম ভাঙে তাঁর। দেখেন, বিছানার পাশে বিষধর চিতি সাপ। স্বামী লক্ষ্মীকান্ত শবর সাপটিকে জখম করে ব্যাগে পুরে রাখেন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয় ওঝা ডাকার। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা কেটে গেলেও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এমন সময় খবর পৌঁছয় বরাবাজার থানার আইসি পার্থসারথি চক্রবর্তীর কাছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের গাড়ি পাঠানো হয়। অ্যাম্বুলেন্স আসার আগেই পুলিশ পৌঁছে ঝুনপুকি ও পরিবারের সদস্যদের বরাবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসে। চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় চিকিৎসা। আইসি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে খোঁজখবর রাখেন।
এর মধ্যে লক্ষ্মীকান্ত থানায় সাপভর্তি ব্যাগ নিয়ে হাজির হলে পুলিশ কর্মীরা চমকে যান। পরে সাপটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ঝুনপুকি আপাতত বিপদমুক্ত হলেও তাঁকে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁদের পরামর্শ, সাপে কামড়ালে অবিলম্বে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করালে প্রাণ বাঁচানো সম্ভব, কিন্তু অন্ধবিশ্বাসে ওঝা–গুণীনের হাতে তুলে দিলে মরণ অনিবার্য।
Post Comment