নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া:
“নো শিফটিং, নো সার্ভিস।” এই অনড় অবস্থানে কর্মবিরতি চলছেই দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ইন্টার্নদের। কর্মবিরতি বুধবারও অব্যাহত। ফলে হাসপাতালের নিয়মিত চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত বিপর্যস্ত। সোমবার থেকে চলা এই আন্দোলনের জেরে বহু রোগীকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।
ইন্টার্ন ডাক্তারদের দাবি, পুরুলিয়া শহর ক্যাম্পাসকে অবিলম্বে হাতোয়াড়ায় স্থানান্তরিত করতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও এখনো পর্যন্ত কোনও সদর্থক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ১৭ অক্টোবর এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে প্রশাসনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা রাজ্যের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো, জেলা শাসক ড. রজত নন্দা, পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, সহ সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সরেন, বাঘমুন্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো, পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়, পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি, জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ প্রতিমা সরেন এবং স্বাস্থ্য দফতরের অন্যান্য আধিকারিকদের। ক্যাম্পাস সরানোর দিকনির্দেশ এই বৈঠকেই নির্ধারিত হবে বলে জানা গেছে।

কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া ইন্টার্ন অরিত্র মুন্সী বলেন, “আমরা ১৭ তারিখের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। যদি ওই বৈঠকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না হয়, আমাদের আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করবে। আপাতত অনির্দিষ্টকালীন কর্মবিরতি চলছেই।”
ইন্টার্নদের অভিযোগ, হাতোয়াড়া থেকে আসা-যাওয়ার পথে পর্যাপ্ত যানবাহনের অভাব রয়েছে। রাস্তাও নির্জন ও দুর্গম, বিশেষ করে শীতকালে অবস্থা আরও খারাপ হবে। নারী চিকিৎসকদের জন্য এই যাতায়াত বিশেষভাবে সমস্যাজনক। তাদের আরও দাবি, হাতোয়াড়ার একাধিক ভবন ফাঁকা পড়ে আছে, অথচ সেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে না।
অন্যদিকে, সদর হাসপাতালে রোগীর চাপ ক্রমশ বাড়ছে। অনেক রোগীকে মাটিতে শুয়ে থাকতে হচ্ছে। ইন্টার্নদের মতে, সদর ক্যাম্পাস এখানেই থাকলে চিকিৎসা পরিষেবা অনেক সহজ হতো।
এদিকে এখনও গোশালার ওভারব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় রেলগেটের যানজট বড়ো বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ফলে রোগীকে দূরে হাতোয়াড়ায় নিয়ে যাওয়া আরও বিপজ্জনক হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এলাকার জনগণ।
সবমিলিয়ে, দেবেন মাহাতো মেডিক্যালে ক্যাম্পাস সরানো নিয়ে জট আরও ঘন হচ্ছে। নজর এখন ১৭ অক্টোবরের প্রশাসনিক বৈঠকের দিকে— সেখানেই নির্ধারিত হবে, শহর ক্যাম্পাস কি সত্যিই সরবে হাতোয়াড়ায়?











Post Comment