নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া:
জল থইথই পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৪৬-এ হঠাৎ চাঞ্চল্য ছড়াল পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের টামনা থানার অন্তর্গত তারা ড্যাম সংলগ্ন অঞ্চলে। বৃষ্টি সঙ্গে করেই মৎস্যপ্রেমীরা ঝুঁকি নিয়ে ২০ ফুট উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে জাল ফেলছিলেন। ছবি তুলতে হাজির ছিলেন একাধিক আলোকচিত্রী। এ যেন বর্ষার এক রুটিন দৃশ্য।
তবে এবারে ঘটল ব্যতিক্রম। চাঁদরাডি গ্রামের বিকাশ গোপের জালে ধরা পড়ল এক অদ্ভুত, নরম ও পিছল মাছ। চেহারা একেবারেই চেনা নয়। জলে পিছলে বেরিয়ে যাওয়া এই মাছকে দেখে হতবাক প্রত্যেকে। জলাধারের চারপাশে শুরু হল তুমুল হইচই। বন্ধ হয়ে গেল মাছ ধরা।
এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে মাছের ছবি। দ্রুত খবর পৌঁছয় মৎস্য দপ্তরে। প্রাথমিকভাবে পর্যবেক্ষণ করে পুরুলিয়া মৎস্য দপ্তরের সহ-মৎস্য অধিকর্তা পিয়াল সর্দার জানান, “ছবি দেখে নিশ্চিত আমরা, এটি আমেরিকান ঈল। কিন্তু এটা এখানে এল কীভাবে? আশ্চর্য লাগছে।”

কী এই আমেরিকান ঈল?
উত্তর আমেরিকার এই মাছ সাধারণত সমুদ্র ও নদীর বাসিন্দা। ডিম পাড়ে সমুদ্রে, সেখান থেকে জন্ম নেওয়া লার্ভা স্রোতের টানে চলে আসে নদীতে। মিষ্টি জলের মধ্যেই এদের জীবনচক্র। নিশাচর এই মাছ মূলত রাতেই শিকার করে। ঘ্রাণশক্তি এতটাই প্রবল যে অন্ধকারেও খাবার খুঁজে পেতে সমস্যা হয় না।
এরা সর্বভুক — পোকামাকড়, ছোট মাছ, জলজ প্রাণী, এমনকি ঝিনুক পর্যন্ত খেয়ে ফেলে। বিশ্বজুড়ে এই মাছ সংরক্ষণের উদ্যোগ চলছে, কারণ সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে।
তাহলে এই মাছ পুরুলিয়ায় এল কীভাবে?
এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। জেলার কোনও জলাশয়ে আমেরিকান ঈল থাকার কথা নয়। নদী কিংবা সমুদ্রের সংযোগ তো আরও দূরের ব্যাপার। এই নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে মৎস্য দপ্তর।
Post Comment