insta logo
Loading ...
×

স্থান জটে আদিবাসী কুড়মি সমাজের প্রতিবাদ সভা, সভায় পূর্ণ সহযোগিতা করবে প্রশাসন

স্থান জটে আদিবাসী কুড়মি সমাজের প্রতিবাদ সভা, সভায় পূর্ণ সহযোগিতা করবে প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া :

আদিবাসী কুড়মি সমাজের প্রতিবাদ সভা নিয়ে জট আরও বাড়ল। পুলিশের অনুমতি মিললেও সভাস্থল নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে ফের পিছিয়ে গেল কর্মসূচির দিনক্ষণ। আগামী ৮ অক্টোবর সভা করার সিদ্ধান্ত আগেই ঘোষণা করেছিল সংগঠন। কিন্তু সভা কোথায় হবে, সেই প্রশ্নের এখনও সুরাহা হয়নি।

পুরুলিয়া জেলা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কুড়মি সমাজের সভা আয়োজনের ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জননিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই বিকল্প সভাস্থলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সভা সুষ্ঠুভাবে করতে পূর্ণ সহযোগিতা করবে প্রশাসন। এমনকি সভা শেষে সংগঠনের প্রতিনিধিরা যাতে স্মারকলিপি জমা দিতে পারেন, তারও আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কিন্তু সংগঠন দাবি করেছে, তারা সভা করতে চায় পুরুলিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্র ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে। সেখানে ২০ থেকে ৩০ হাজার মানুষের জমায়েত হবে বলেই পুলিশের অনুমতি মিলছে না। কারণ, ওই এলাকা জেলা সদর হাসপাতাল, প্রশাসনিক ভবন, দমকল দপ্তর, জেলা পুলিশ কার্যালয়, কাপড় বাজার— সব মিলিয়ে পুরুলিয়া শহরের বাণিজ্য ও প্রশাসনিক কেন্দ্র। ফলে ওই অঞ্চলে সভা হলে যানজট, বিশৃঙ্খলা ও জনদুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে।

পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আবেদনকারীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক বিকল্প স্থানের কথা— যেমন শিমুলিয়া, ডুঁড়কু, হুলহুলিটাঁড় বা রায়বাঘিনীর মাঠ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকাগুলিতে সভা হলে নির্দিষ্ট থানায় বা পুলিশ লাইনে স্মারকলিপি গ্রহণের ব্যবস্থা থাকবে। উদাহরণস্বরূপ, শিমুলিয়ায় সভা হলে স্মারকলিপি নেওয়া হবে বেলগুমা পুলিশ লাইনে, ডুঁড়কুতে হলে টামনা থানায়, হুলহুলিটাঁড়ে হলে ছড়রা ব্যাটেলিয়ানে।

তবুও কুড়মি সমাজের নেতারা শহরের মধ্যেই সভা করতে অনড়। সংগঠনের মূল খুঁটি মূল মানতা অজিতপ্রসাদ মাহাতো বলেন, “আমরা ৮ তারিখ সভা করবই। ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে অনুমতি না পাওয়ায় হিলভিউ গ্রাউন্ডে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পুলিশের দিকেই তাকিয়ে আছি।”

অন্যদিকে, জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা, পার্কিং, জমায়েত— সব দিক বিবেচনা করেই সভাস্থল বাছাইয়ের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সভা শান্তিপূর্ণভাবে করতে পুলিশ প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করবে। কিন্তু শহরের কেন্দ্রস্থলে সভার অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।”

প্রশাসনের অনুমান , সভায় ঝাড়খণ্ড থেকেও বহু কর্মী-সমর্থক আসতে পারেন। ফলে বিপুল জনসমাগমে কোনওরকম বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।

প্রসঙ্গত, গত ২০ সেপ্টেম্বর কুড়মি সমাজ রেল অবরোধের কর্মসূচি গ্রহণ করলে কলকাতা হাইকোর্ট সেটিকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। তার পর থেকেই পুলিশি পদক্ষেপ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ওই সংগঠন। সেই অভিযোগেরই প্রতিবাদ জানাতে পুরুলিয়ায় সভার ডাক দিয়েছে তারা। প্রথমে ২৫ সেপ্টেম্বর, পরে ৫ অক্টোবর, এবং সর্বশেষ ৮ অক্টোবর তারিখ ঘোষণা করা হলেও এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সভাস্থল ঠিক হয়নি।

Post Comment