insta logo
Loading ...
×

প্রাণ হাতে এক রাতে ৩৪ প্রাণ বাঁচিয়ে পুরস্কৃত পুলিশ

প্রাণ হাতে এক রাতে ৩৪ প্রাণ বাঁচিয়ে পুরস্কৃত পুলিশ

সুইটি চন্দ্র, পুরুলিয়া:

এক হাতে প্রাণ, অন্য হাতে কর্তব্য। রাতের আঁধারে পাহাড়ি ঝোরার প্রবল স্রোতে ভেসে যাচ্ছিল এক পিকআপ ভ্যান ভর্তি ৩৪ জন যাত্রী। মৃত্যু যখন মুহূর্তের দূরত্বে, তখনই জীবন ফিরিয়ে দিলেন বান্দোয়ান থানার পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়াররা। পুলিশ দিবসে তাঁদের সেই সাহসিকতাকেই কুর্নিশ জানাল জেলা পুলিশ। সোমবার শহরের বেলাগুমা পুলিশ লাইনে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত হলেন বান্দোয়ান থানার ওসি মনতাজ শেখ, এএসআই রাজু চক্রবর্তী, সিভিক ভলান্টিয়ার আদিত্য মাহাতো, কমলাকান্ত সহিস ও লখীন্দর মানকি।

২৩ আগস্ট রাত। টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঝোরার কজওয়ে তখন ভয়ঙ্কর। ঝাড়খণ্ডের বোকারোর কবিরাজের বাড়ি থেকে ফেরার পথে বান্দোয়ানের কুয়েরডি, আস্তাগোড়া ও আশপাশের গ্রামের মানুষজন পিকআপ ভ্যানে চেপে ফিরছিলেন। রাত একটা নাগাদ বান্দোয়ান–গালুডি ভায়া দুয়ারসিনি রাজ্য সড়কের আমলি ঝোরায় কজওয়ে পার হতে গিয়েই ঘটে বিপদ। যাত্রীবোঝাই ভ্যান মুহূর্তে কজওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে ঝোরার বন্যস্রোতে। চিৎকার–আর্তনাদে পাহাড়ি গ্রাম কেঁপে ওঠে। কেউ ডাল আঁকড়ে ধরেছেন, কেউ পাথরের ফাঁকে আটকে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। প্রায় ২০ মিনিট ধরে ৩৪ জন যাত্রী বাঁচার মরিয়া চেষ্টা চালান।

ঠিক তখনই সিভিক ভলান্টিয়ার ঘটনাটি দেখে খবর দেন এএসআই রাজু চক্রবর্তীকে। থানায় খবর পাঠানো হয়। মিনিটের মধ্যেই পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ার ও স্থানীয় পেট্রোল পাম্প কর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েন। ট্রাক্টরের দড়ি এনে ছুঁড়ে দেওয়া হয় ঝোরায়। শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। প্রবল স্রোতের মধ্যে হাত ধরাধরি করে একে একে উদ্ধার হন ৩৪ জনই। মৃত্যু থেকে ফিরে নতুন জীবন পান তাঁরা।

অন্যদিকে পুলিশ দিবসে নিজের বক্তব্যে মাও আতঙ্কের অযোধ্যার স্মৃতি মনে করালেন পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, “একসময় রাতের আঁধারে যেখানে কুকুর আর পুলিশ ছাড়া কেউ চলাচল করার সাহস পেত না, সেখানে জেলা পুলিশ সাফল্যের সঙ্গে আয়োজন করল নাইট ম্যারাথনের মতো ন্যাশনাল ইভেন্ট। এই ইভেন্ট প্রমাণ করে কতটা বদলে গেছে অযোধ্যা। এই পরিবর্তন জেলা পুলিশেরই সাফল্য।”

তিনি আরও বলেন, ” পুলিশ অনেকটা ক্রিকেটারদের মতো জিতলে কাঁধে নিয়ে লাফালাফি করে জনতা, আর হারলে ঘরে ছোঁড়ে পাথর। অথচ জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় নিজেদের ব্যক্তিগত জীবন বিসর্জন দেয় পুলিশ। ” পুলিশ দিবসে পুলিশের পরিবারের সদস্যদের আত্মত্যাগকেও স্মরণ করেছেন পুলিশ সুপার।

অন্যদিকে গত এক বছরে ২ হাজারেরও বেশি হারানো মোবাইল উদ্ধার করেছে জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ। এদিন পুলিশ দিবসে এসওজি-র ওসি জয়ন্ত কুমার চক্রবর্তীও পুরস্কৃত হন। তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন পুলিশ সুপার।

Post Comment