নিজস্ব প্রতিনিধি , পুরুলিয়া:
বর্ষার মরসুমে খানাখন্দে ভর্তি রাস্তাগুলিতে অল্প বৃষ্টিতেই জমে যাচ্ছে জল। সেই জলে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে গর্ত, আর তাতেই ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। পুরুলিয়া শহরের একাধিক ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলি বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অথচ রাস্তা সারাইয়ে কোনও হেলদোল নেই পুরুলিয়া পৌরসভার, অভিযোগ শহরবাসীর।
শুধু অভিযোগ নয়, ঘটেছে মৃত্যুও। সম্প্রতি পুরুলিয়া-রাঁচি সড়কের গর্তে বাইক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান এক স্কুল শিক্ষক। সেই ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ শহরবাসী রাস্তায় নেমে এসে সড়ক অবরোধ করেন। দাবি ওঠে, অবিলম্বে রাস্তা মেরামত করতে হবে।
পুরুলিয়া শহরের ৩, ৬, ১১, ১৮, ২১, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড সহ একাধিক ওয়ার্ডের প্রধান রাস্তাগুলি খানাখন্দে ভর্তি। কোথাও কোথাও ডোবা বা খাল থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই সেই জলে ভরে যাচ্ছে রাস্তার গর্ত। যানবাহন চালাতে গিয়ে অনেক সময়েই কোথায় গর্ত বুঝতে পারছেন না চালকেরা। তাতেই ঘটছে দুর্ঘটনা।
স্থানীয় বাসিন্দা অচিন্ত প্রামাণিক বলেন, “রোজ প্রায় কোনও না কোনও গাড়ি এই গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। স্কুলে যাওয়া বাচ্চারা, রোগী নিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুল্যান্স— কেউই নিরাপদ নয়। পৌরসভা শুধু আশ্বাস দেয়, কাজ কিছু হয় না।”
আর এক শহরবাসী বিপিন ব্যানার্জীর অভিযোগ, “বর্ষাকালে রাস্তা কেমন থাকবে সেটা জানে পৌরসভা। কিন্তু আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রাস্তার এই অবস্থা আমাদের নাগরিক জীবনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
পুরুলিয়া জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি গৌতম রায়ের দাবি, “পুরুলিয়া শহরের রাস্তা বেহাল। উন্নয়ন কার্যত থমকে রয়েছে। খাল-ডোবায় ভর্তি রাস্তায় প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই।”
এই অভিযোগগুলির জবাবে পুরুলিয়া পৌরসভার পৌরপ্রধান নবেন্দু মাহালি জানান, “পুরুলিয়ার বিভিন্ন রাস্তায় এখন পাইপলাইন বসানো, বিদ্যুৎ খুঁটি স্থাপন, এবং বিভিন্ন পরিষেবার জন্য তার বসানোর কাজ চলছে। তাই কিছু রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির পর ঠিকমতো সারানো হয়নি। পাশাপাশি, বর্ষাকালে বৃষ্টির কারণে রাস্তা সারাইয়ের কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে যেসব এলাকায় গর্ত রয়েছে, সেখানে সতর্কতা বোর্ড বসানো হয়েছে। আবহাওয়া একটু পরিষ্কার হলেই দ্রুত মেরামতের কাজ শুরু হবে।”
তবে শহরবাসীর প্রশ্ন, শুধু আশ্বাসেই কি চলবে? নাকি প্রশাসন বাস্তবিক পদক্ষেপ নেবে?
Post Comment